যতই দিন যাচ্ছে, ততই যেন সমালোচনায় জড়িয়ে পড়ছেন সদ্যবিদায়ী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। বিরোধী দল থেকে শুরু করে অভিনয় শিল্পীদের নিয়েও নানা কটুক্তি করেছেন ডা. মুরাদ। তবে এতদিন এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ না করলেও সম্প্রতি তার পদত্যাগের পর যেন গর্জে উঠেছেন সকলেই। এদিকে নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে গেলো বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে৮৫৮৫ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন ডা. মুরাদ হাসান। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রীর এই দেশ ছাড়ার ঘটনায় ব্যাঙ্গাত্বমূলক একটি গান গেয়েছেন হিরো আলম।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) ‘পালালো পালালো মুরাদ হাসান’ শিরোনামে গানটি অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেন হিরো আলম। গানটির কথা ও সুর করেছেন মমো রহমান।
গানটি প্রকাশের আগে হিরো আলম এক ভিডিও বার্তায় বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আপনারা শুনতেছেন বাদাম বাদাম গান। তবে আজ একটি ব্যতিক্রমী গান করবো। মুরাদ হাসান ও বাদাম বাদাম মিক্সড করে একটি গান করছি। দুই গান মিলে ভেঙে একটি নতুন গান উপহার দিতে যাচ্ছি।
এর আগে হিরো আলমকে নিয়ে নানা কটূ কথা বলেছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। সুযোগ বুঝে প্রতিমন্ত্রীর সেই বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠছিলেন হিরো আলম। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিওতে ডা. মুরাদকে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি।
ভিডিওবার্তায় হিরো আলম বলেন, ‘সমালোচনা করাই ডা. মুরাদের কাজ। তিনি মনে করেন তিনিই একমাত্র শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, বাকি সবাই নিম্নশ্রেণির লোক। তার মতে আমার গান নাকি নিম্নশ্রেণির লোকদের কাছে শোভা পায়। আমার চেহারা নিয়েও কথা বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. মুরাদ অনেক দিন ধরে বড় বড় সব হিরো-হিরোইনদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করে যাচ্ছেন। শাকিব ভাই, মৌসুমী আপু, মাহির মতো বড় তারকাদের নিয়ে তিনি বাজে মন্তব্য করেছেন। মানুষ সবাই আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষ মানুষকে যদি ঘৃণা করে তার চেয়ে বড় খারাপ কাজ আর নেই।’
গানের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি সংগীতশিল্পী নই, আমি সখের বশে গান করি। গুলশান ১-এর যে অনুষ্ঠানের কথা তিনি বললেন, সে অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি। উনি মিথ্যা বলছেন কি না, জানি না।’
ডা. মুরাদকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে অন্যান্য এমপি-মন্ত্রীদের সাহস আরও বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। হিরো আলমের ভাষ্য, ‘বেশি বাড়লে মানুষের পতন হয়, এর প্রমাণ এই ডা. মুরাদ। আমার এবং অন্যদের চেহারা নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য আমি সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করব।’
এর আগে একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠানে হিরো আলমকে নিয়ে কটূক্তি করেন ডা. মুরাদ হাসান। তিনি বলেন, ‘একদিন এক অনুষ্ঠানে এসে আমার সামনে গান গাইছিল। গান শেষে আমি তাকে বললাম, তুমি যে গান গাইতে পার না, তোমার কি কোনো লজ্জা-শরম নেই? গান গাইতে সুর, তাল, লয় লাগবে, কণ্ঠ লাগবে। তোমার চেহারা এবং কণ্ঠ আল্লাহ্র রহমতে এত সুন্দর, আমার সামনে গান গাওয়ার ধৃষ্টতা তুমি দেখিয়েছ! আমাদের সামনে না দেখিয়ে নিম্নশ্রেণির যারা তোমাকে দেখে তাদের সামনে গিয়ে গাও, গুলশান-বনানীতে এসে গান গেয়ো না।’
ব্যক্তিগত জীবনে দুই সন্তানের অভিভাবক ডা. মুরাদ হাসান। তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানও একজন চিকিৎসক। সম্প্রতি একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে মুরাদের জের আলোচনায় আসেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারাও। জানা যায়, গত কয়েক বছরে মুরাদ যত টাকা আয় করেছেন, তার থেকেও অধিক অর্থ-সম্পতির মালিক তার স্ত্রী। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।