গোটা বিশ্বের মোড়ল খ্যাত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধশালী। বর্তমান সময়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন জো বাইডেন। সম্প্রতি তিনি বিশ্বের গনতান্ত্রিক দেশ গুলোর সরকার প্রধানদের নিয়ে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। এই সম্মেলনে বিশ্বের অনেক গনতান্ত্রিক দেশই আমন্ত্রন পায়নি। এই নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। এবার এই বিষয়ে বেশ কিছু কথা বললেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলন নিয়ে ভয়েস অব আমেরিকায় মতামত প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, ‘বিভক্তি ছিল এবং আছে। কারণ লড়াইটা কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই। এই লড়াইটা কীভাবে হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে মোটাদাগে এটা বলা যায়, যে সূচনাটা হলো এটা গণতন্ত্র সম্মেলনের একটা ভালো দিক বা সাফল্য। পৃথিবীজুড়ে গণতন্ত্রের যে সংকট চলছে সেটা সম্মিলিতভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। গণতন্ত্র সম্মেলন থেকে এই তাগিদই এসেছে। আলাদা আলাদা ভাবে রাষ্ট্রগুলো কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তবে বৈশ্বিক একটা প্রচেষ্টা থাকা দরকার। তবে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ থেকেই যাচ্ছে। কীভাবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে? সুনির্দিষ্ট কোনো কাঠামো কি তৈরি করা যাবে? যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যাবে? কর্তৃত্ববাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনোরকম প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা কি থাকবে? এই প্রশ্ন এবং চ্যালেঞ্জ রয়েই গেছে। কিন্তু একটা শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এর কোনো সুরাহা হবে না। যে সূচনাটুকু হলো তাকে সামনে নিয়ে যেতে হবে। তবে পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক না দ্বিপাক্ষিক না আঞ্চলিক হবে তা খুঁজে বের করতে হবে।’
ড. আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, তার অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের অবস্থা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভেতরের এই সংকট মোকাবিলা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। বলে রাখা ভাল, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আদর্শ হিসেবে গণতন্ত্রের কথা বলার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা বাড়ানো, যাতে অন্যরা অনুসরণ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলছে চীন-রাশিয়া সেভাবে বলছে না। সংকটটা সেখানেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এই বিভক্তি সংঘাতের রূপ নেয় কিনা। এই সম্মেলনে পাকিস্তানের অংশ না নেওয়াটা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নয়া এক বার্তা।। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র পাকিস্তান চীনের প্রভাবে যে সম্মেলনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রয়েছে তা স্পষ্ট।’
এদিকে বাংলাদেশও এই সম্মেলনে আমন্ত্রন পায়নি। তবে এই তালিকায় আরও রয়েছে চীন-রাশিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই সকল দেশ গুলো যুক্তরাষ্ট্রের গনতন্ত্র সম্মেলন নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে। এদিকে বাংলাদেশ জো বাইডেনের সম্মেলনে যোগ না দেওয়ায় রাশিয়া সাদুবাদ জানিয়েছে।