দুর্নীতির অনেক শাখা রয়েছে, আর ঐ সকল শাখা গুলোর মধ্যে একটি হলো ঘুষ। এই শব্দটির (ঘুষ) সঙ্গে মোটামুটি আমরা সকলেই পরিচিত। যা কোনো কিছুর বিনিময়ে অবৈধভাবে কিছু হাতিয়ে নেয়াকেই বুঝায়। বর্তমানে ঘুষ একটি সামাজিক ব্যধি হিসেবেই পরিচিত। আর এ নিয়ে অনেক সময় ঘটে থাকে নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। সম্প্রতি এবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নাটোরে।
জানা গেছে, ঘুষ না দেওয়ায় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের এক নারী অফিস সহায়কের (পিয়ন) হাতে লাঞ্ছিত ও আশোভন আচরণের শিকার হয়েছেন বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাহান আলী। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যানপ্রার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫ নম্বর বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান আলী তার কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। এসময় উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) জমেলা বেগম তার হাত থেকে মনোনয়নপত্র নিয়ে দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি টাকা না দিয়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানাতে গেলে জমেলা বেগম সেখানে প্রবেশ করে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমর্থকদের ধাক্কা দেন। তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সামনেই জুতা খুলে মারতে উদ্যত হন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাহান আলী বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র তোলার দিন পিয়ন জবেদা বেগম আমার কাছে উৎকোচ দাবি করেন। ওইদিন আমি তাকে বুঝিয়ে মনোনয়নপত্র তুলে নিয়ে আসি। আজ মনোনয়ন জমা দিতে গেলে পুনরায় দুই হাজার টাকা দাবি করেন। আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি নির্বাচন কর্মকর্তার সামনেই আমাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। জুতা খুলে মারতে উদ্যত হন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। আমি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি।
জানতে চাইলে নারী অফিস সহায়ক জবেদা বেগম বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে আসা লোকজন আমার পিঠে হাত দিয়েছিল। আমি সেটার প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’
এদিকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম গণমাধ্যমকে জানান, একজন নারী অফিস সহায়কের কাছ থেকে এমন আচরণ কখনো কাম্য নয়। এ ঘটনায় এরই একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, এ অভিযোগের আলোকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।