মুন্সীগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা দুই শিশু সন্তান ও স্বামীর পর এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন গৃহবধূ শান্তা খানম। দেখতে না দেখতেই গোটা পরিবারের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে যেন নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দুই সন্তানের পর এর আগে ৪ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান স্বামী কাওসার খান (৩৭)। আর এরই মধ্যে গতকাল রাত ২ টা ৩০ মিনিটের দিকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা.এস এম আইউব হোসেন জানান, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোছা. শান্তা বেগম(২৮) এর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে ৪৮ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) থেকে স্ত্রী শান্তা সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শান্তা খানমের মৃত্যুর খবরে পরিবারটিতে আবারও শুরু হয়েছে শোকের মাতম। শোকের ছায়া নেমে এসেছে কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা এলাকায়।
এর আগে ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ শান্তা খানমের দুই শিশু সন্তান ছেলে ইয়াসিন খান (৬) ও মেয়ে ফাতেমা নোহরা খানম (৩) মারা যায়।
এরপর গত শনিবার (৪ ডিসেম্বর) একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ শান্তা খানমের স্বামী কাওসার খান (৩৭) মারা যান।
নিহত কাওসার খান কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বয়লা খান বাড়ির আব্দুস সালাম খানের ছেলে। তিনি মুন্সিগঞ্জের আবুল খায়ের গ্রুপে রিভার ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কাজের সূত্রে স্ত্রী শান্তা খানম এবং দুই শিশু সন্তান ইয়াসিন খান ও ফাতেমা নোহরা খানমকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জের চর মুক্তারপুরের শাহ সিমেন্ট রোডে জয়নাল মিয়ার চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন।
গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ভোরের দিকে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে কাওসার খানের পরিবারের চারজনই ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হন।
তাদেরকে ওইদিনই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে একে একে পরিবারের চারজনই মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে এ ঘটনায় মৃত ঐ গৃহবধুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে সব প্রক্রিয়া শেষে আজ বিকেলে শান্তা খানমের মৃত দেহ বাড়ি আনা হবে। এরপর জানাজা শেষে তার সৎকারের ব্যবস্থা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
এদিকে একবারেই সবাইকে হারিয়ে রীতিমতো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শান্তা খানমের পরিবার। তাদের এই অকাল মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।