জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটভুক্ত জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানকে সন্ত্রাসীদের দ্বারা বর্বরভাবে হামলা করা হয়েছে। হামলাকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগরে আলরাজি কমপ্লেক্স গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সর্বদলীয় বৈঠক শেষে বেরিয়ে রাত পৌনে ৮টার দিকে রাস্তা পার হওয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে খন্দকার লুৎফর রহমানকে উদ্ধার করে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তথ্যটি নিশ্চিত করে সমমনা জাগপার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজ বলেন, “রাস্তায় পার হওয়ার সময় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী খন্দকার লুৎফর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।”
রমনা থানা পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) ফোনে যোগাযোগ করা গেলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে ডিউটি অফিসার জানান, এলাকা পল্টন থানার আওতায়। কিন্তু পল্টন থানার ওসিকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি, এবং সেখানে ডিউটি অফিসার জানান এলাকা রমনা থানার আওতায়। ফলে পুলিশের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সর্বদলীয় বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও আরও ২২টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে পাঁচ দফা দাবি গৃহীত হয়, যার মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের জোটকে “ফ্যাসিবাদী শক্তি” হিসেবে অবিলম্বে বিচার করার দাবি।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খন্দকার লুৎফর রহমানের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
রাতের এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,‘এ ধরনের হামলা আমরা মনে করি এক গভীর চক্রান্ত। এটা আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার একটা ষড়যন্ত্র হতে পারে।’ বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
ফখরুল আশা প্রকাশ করে বলেন, “সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ঐক্যই গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে এবং গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা প্রতিষ্ঠা করবে।”
পৃথকভাবে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটও হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেছে।
বিবৃতিদাতারা হলেন, জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণদলের সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ব্যারিস্টার নাসিম খান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এস এম শাহাদাত, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সভাপতি আবদুল্লাহ-আল-হারুন সোহেল।
বিবৃতিতে জোট নেতারা বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে খন্দকার লুৎফর রহমানের ওপর সন্ত্রাসীদের এই হামলার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ গত সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর দেশে যখন নির্বাচনের আমেজ শুরু হচ্ছে, তখনই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’
খন্দকার লুৎফরকে দেখতে হাসপাতলে ডা. রফিক
সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত খন্দকার লুৎফর রহমানকে দেখতে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
সর্বদলীয় বৈঠক শেষে ফেরার পথে জাগপা সভাপতিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম
তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন এবং আহত নেতার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।
পরে ডা. রফিক জানান, খন্দকার লুৎফর রহমানকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। এ হামলায় তার ডান হাঁটু, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত লাগে এবং একাধিক স্থানে সেলাই দিতে হয়েছে।



