শিবিরের প্যানেলে জায়গা পাওয়ার পর সর্ব মিত্র চাকমার স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ইসলামী ছাত্র শিবির একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল ঘোষণা করেছে। সংগঠনের বাইরে প্যানেলে স্থান পেয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সর্ব মিত্র চাকমা। প্যানেলে স্থান পাওয়ার পর তিনি তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

সোমবার (১৮ আগস্ট) তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে তিনি এই বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

তিনি লিখেছেন, ডাকসু-২৫ নির্বাচনে ‘ইউনিফাইড স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স’ থেকে কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার দৃষ্টিতে, একটি রাজ্যের মধ্যে আরেকটি রাজ্য, যেখানে অর্ধ লক্ষের অধিক শিক্ষার্থী স্রেফ কোনো একভাবে দিনযাপন করে। না আছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, পুরো ক্যাম্পাস হন্যে হয়ে খুঁজেও একবেলা মানসম্মত-স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া দুষ্কর, রয়েছে আবাসন সংকট, নেই গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত উপকরণাদি, চলছে স্বাস্থ্য বিমার নামে প্রহসন, অতঃপর চিকিৎসার অভাবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু ইত্যাদি। পদে পদে অবহেলা-বঞ্চনা আর একরাশ হতাশা।

সর্ব মিত্র লিখেছেন, “কিন্তু এত অবহেলা সত্ত্বেও বেঁচে থাকা এই মানুষগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ লুকানো শক্তি আছে, যা রাষ্ট্রযন্ত্রকে সদা উদ্বিগ্ন রাখে।” এই মানুষগুলোর ক্ষমতা আছে যে কোনও সময় রাষ্ট্রের ভিত্তি কাঁপিয়ে দেওয়ার। এর একটি বড় এবং ঘনিষ্ঠ উদাহরণ হল জুলাই বিদ্রোহ। সেই শঙ্কা থেকে এই মানুষগুলোকে দমিয়ে রাখার যত আয়োজন, তা রাষ্ট্রযন্ত্র করে। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫৪ বছরে ডাকসু অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র আট বার, যেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল প্রতি বছর।

তিনি লিখেছেন, “আমি সর্ব মিত্র, সমাজে প্রচলিত তথাকথিত ‘নেতা’ হয়ে সুপেরিয়রিটি চর্চার প্রয়াস বা বাসনা আমার নেই। এখানে যারা আসেন তারা সকলেই নিঃসন্দেহে দেশের সেরা প্রতিভা, লক্ষ লক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে লড়াই করে জয়লাভ করে তারা এখানে আসেন, তাদের ওপর কর্তৃত্ব দেখানোর দুঃসাহস আমি ঘুণাক্ষরেও করি না।

তিনি আরও লিখেছেন, “যদি আমি আপনাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন পাই, তাহলে আমি আপনাদের প্রতিনিধি হতে চাই এবং হাজারো কণ্ঠের একটি কণ্ঠস্বর হতে চাই। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে একজন শিক্ষার্থীর মৌলিক অধিকার, নারীর অধিকার, আদিবাসী-সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে আমার কণ্ঠ সর্বদা সোচ্চার ছিল এবং আমৃত্যু সব অন্যায়-অবিচার-অনিয়ম-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান অবিচল থাকবে।”আমার বিশ্বাস, আমার স্বাতন্ত্র্য, সৎসাহসের সঙ্গে আপনাদের ভালোবাসা আমাকে উজ্জীবিত রাখবে। আমাদের সংগ্রাম জারি থাকবে!

পোস্টের শেষে, সর্ব মিত্র চাকমা সকলের সহযোগিতা, সমর্থন এবং পরামর্শের জন্য আশা প্রকাশ করেছেন।

Scroll to Top