ওয়াকিটকিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের দেওয়া বক্তব্য ফাঁস করার অভিযোগে অমি দাশ নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, অমি দাশ পুলিশ টেলিক ইউনিটের কনস্টেবল। বর্তমানে তিনি সিএমপির খুলশী থানায় কর্মরত রয়েছেন। অমি দাশের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়। তার বাবার নাম রাজিব দাশ।
গত ১২ আগস্ট ওয়াকিটকিতে সিএমপির সকল সদস্যের উদ্দেশ্যে অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেন কমিশনার হাসিব আজিজ। এ নির্দেশ দেন তিনি, যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় নগরের বন্দর থানার এক কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। কমিশনারের এই বার্তা ওয়াকিটকিসহ ভিডিও করেন এক কর্মকর্তা। পরে সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
কমিশনারের বার্তা ফাঁস হওয়ায় চট্টগ্রাম নগরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা অস্বস্তিতে পড়েন। নিজেদের গোপনীয় বার্তা বাইরে চলে যাওয়ায় তারা তৎপর হন। এরপর একাধিক টিম তদন্ত করে ওই কনস্টেবলকে শনাক্ত করে।
এর আগে, গত ১১ আগস্ট দিবাগত রাত ২টার দিকে সল্টগোলা ক্রসিং, ইশান মিস্ত্রি হাট সংলগ্ন সড়কে মিছিল করেছিল আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন।
পরদিন দিবাগত রাতে ওয়্যারলেসে সিএমপির সব সদস্যদের উদ্দেশ্যে মৌখিক নির্দেশনায় কমিশনার বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি, ডিবির টিমসমূহ ও সকল ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া এবং লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কোনো পেট্রোল পার্টি, মোবাইল পার্টি, ডিবির পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি বের হবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের প্রাধিকার অনুযায়ী লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কেউ বের হবে না। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে। শুধুমাত্র রবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে (বন্দর থানা) একজন এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেকদিন আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে অস্ত্র বের করলে, আই রিপিট, সেটা ধারালো অস্ত্র হতে পারে কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে—অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই, সবাইকে বলছি। আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার, দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সকল পুলিশ অফিসারের আছে।

