অবশেষে মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি, দিলেন যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

দেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’। এই দিনে দেশের আপামর জনতা ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দৃপ্ত পদক্ষেপ নেয়। ঐতিহাসিক এই আন্দোলনের এক বছর পূর্তিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন দিবসটি উপলক্ষে এক বিশেষ বাণীতে স্মরণ করলেন সেই বীরদের, যাঁরা নিজেদের রক্ত দিয়ে পরিবর্তনের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল— দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম ও আপামর জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ। এই বৈষম্যমূলক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য।’

সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস। বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের আজকের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।

ঐতিহাসিক এই অর্জনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সকল শহীদকে— যারা দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। এ গণ-অভ্যুত্থানে আহত, পঙ্গুত্ব বরণ করা ও দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল বীর জুলাই যোদ্ধার ত্যাগ ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র একটি ব্যাপক সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক উত্তরণের মধ্য দিয়ে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলেও আশা করেন রাষ্ট্রপতি।

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে নেওয়া সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতির এই বাণীতে জাতির ভবিষ্যতের পথরেখা স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, গণতন্ত্রের শক্ত ভিত্তি রচনায় এমন বার্তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে আলোচনা সভা, র‍্যালি ও শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন দিনটিকে স্মরণে রাখতে নানা কর্মসূচি পালন করছে।

Scroll to Top