তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার একটি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এনেছেন অনলাইন সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট বনি আমিন। এই অভিযোগের জবাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন মাহফুজ আলম।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৩টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন:
“তদবিরের কথা যখন উঠল, তখন একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক বন্ধু একজন লোককে আমার ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। প্রস্তাব ছিল, তারা বিটিভির একটি টেন্ডারের কাজ পেলে একটি নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ দেবেন এবং জুলাইয়ে কয়েকটি দেশের প্রোগ্রামে সাহায্য করবেন। আমি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে এটি নিষেধ করি। সদিচ্ছা থাকলেও রাষ্ট্রের আমানতের সঙ্গে প্রতারণা করা যায় না। পরে ওই টেন্ডারের কাজটিও স্থগিত হয়ে যায়।”
তিনি আরও লেখেন, “ওই ব্যক্তি আমাদের কথোপকথনের রেকর্ড করে তা এক সাংবাদিকের কাছে পাঠায়। সাংবাদিক যোগাযোগ করলে আমি জানাই যে, আমরা এই কাজ করিনি। বরং লোকটি ইচ্ছাকৃতভাবে জুলাইয়ের প্রোগ্রামের কথা বলেছে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে। সাংবাদিক আমার কথা বিশ্বাস করে রেকর্ডটি প্রকাশ করেননি।”
মাহফুজ আলম অভিযোগ করেন, “এই সময়ে অনেকেরই দুর্নীতি ফাঁস হয়ে যাচ্ছে বলে তারা আমার পেছনে লেগেছে। বিভিন্ন দলের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এতে জড়িত। তবে সব ষড়যন্ত্রই একদিন প্রকাশ পাবে। পুনশ্চ: গত ১২ মাসে আমার বিরুদ্ধে যত অভিযোগই উঠুক না কেন, দুর্নীতি বা আর্থিক অসঙ্গতির কোনো অভিযোগ কেউ তোলেনি—এটাই কিছু রাজনৈতিক নেতার গাত্রদাহের কারণ। রাষ্ট্রের দায়িত্ব একটি পবিত্র আমানত। আমাদের জন্য ইজ্জত ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ হাজার কোটি টাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।”
পোস্টের শেষাংশে তিনি লেখেন, “মাত্র কয়েকটি বাক্য নিয়ে অযথা জলঘোলা হচ্ছে বলে পোস্টটি এডিট করেছি। কিছু মানুষের কাছে জুলাই হচ্ছে রাজনৈতিক উত্তরণের সিঁড়ি। একাধিক দলের প্রভাবশালীরা আমার/আমাদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তবে এখন সময় এসেছে, গুজব ছড়ানো আর সুযোগ সন্ধানীদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।”
অন্যদিকে, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট বনি আমিন দাবি করেছেন, মাহফুজ আলমের ভাইয়ের অস্ট্রেলিয়ান ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬ কোটি টাকার একটি লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে AUSTRAC (Australian Transaction Reports and Analysis Centre)। তিনি দাবি করেন, এই অর্থ মূলত কিছু লবিং ও ডকুমেন্ট ফাইলিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া ‘কমিশনভিত্তিক হিস্যা’। একই সঙ্গে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, মাহফুজ আলম রাষ্ট্রীয় প্রজেক্টে প্রভাব খাটিয়ে তার ভাইয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় অর্থ পাচার করছেন।



