সম্প্রতি ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাবেক তিন সংসদ সদস্যের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবিটি ছিল চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনের সময়কার, যা ঘিরে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
এই ইস্যুতে শুক্রবার (২৬ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান’ শিরোনামে একটি দীর্ঘ পোস্টে পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা দেন উপদেষ্টা।
ড. খালিদ হোসেন লেখেন, “সম্প্রতি আমি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যাই। আমার সফরে ডিআইজি প্রিজন ও ডেপুটি জেলারসহ কারা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল—ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ধর্মীয় বই-পুস্তক সরবরাহ এবং বন্দিদের জন্য নামাজের স্থান নির্ধারণ সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা।”
তিনি আরও জানান, ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কারাগারগুলোতে নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারে কাজ করা হচ্ছে, যার আওতায় দেশের প্রায় ৭০ হাজার বন্দিকে আনা হবে। এই উদ্যোগকে তিনি একটি “বৃহৎ মানবিক পদক্ষেপ” হিসেবে অভিহিত করেন।
পরিদর্শনকালীন সময়ের বিষয়ে তিনি জানান, “আমি রান্নাঘর, হাসপাতাল, পুরুষ-মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড, এমনকি ফাঁসির মঞ্চ ও ভিআইপি ওয়ার্ডও পরিদর্শন করি। আমার সঙ্গে কোনো ক্যামেরা ছিল না, তবে কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা কিছু ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবিগুলোই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়েছে, যা অবৈধ এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “এই সফর সম্পূর্ণ সরকারি ছিল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। সফরের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আগেই জানানো হয়েছিল। কোনো গোপনীয়তা ছিল না।”
ছবিতে সাবেক এমপিদের উপস্থিতি নিয়ে চলা বিতর্ক সম্পর্কে ড. খালিদ বলেন, “ভিআইপি ওয়ার্ডে আমি মাত্র দুই-তিন মিনিট ছিলাম, এবং সেসময়ও কারা কর্মকর্তারা সঙ্গে ছিলেন। এরপরও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালানো হচ্ছে, যা একটি কায়েমি স্বার্থবাদী সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের অংশ।”
তিনি দাবি করেন, “এই অপপ্রচার পরাজিত রাজনৈতিক শক্তির অংশ, যারা সরকারের শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু সত্যের বিজয় হবেই, এবং সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাবে।”
পোস্টের শেষাংশে তিনি লেখেন, “আমি বিনম্রভাবে বলতে চাই, এসব অপপ্রচার অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। আমরা কোনো বিভ্রান্তি বা ষড়যন্ত্রে পা দেব না। দেশের কল্যাণে এবং সত্যের পথে আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।”



