সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করা এক দম্পতির সম্পর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন স্বামী মোহাম্মদ তারেক। কিডনি দিয়ে জীবন বাঁচানো স্ত্রী উম্মে সাহেদীনা টুনির একপাক্ষিক অভিযোগে যখন তাকে ‘অকৃতজ্ঞ’ ও ‘পাষণ্ড’ স্বামী হিসেবে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, তখন গণমাধ্যমের সামনে ভিন্ন সুরে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তারেক।
তারেক অভিযোগ করেন, কিডনি দানের পেছনে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার চেয়ে বড় ভূমিকা ছিল সম্পত্তির দাবি। তার ভাষায়, “টুনি কিডনি দেওয়ার শর্তে আমার বাড়ির দোতলার মালিকানা চেয়েছিল। আমি ৬০ লাখ টাকার সম্পত্তি লিখে দিয়েছি। তারপর সে কিডনি দেয়।” তিনি আরও বলেন, অপারেশনের কিছুদিন পর থেকেই স্ত্রীর আচরণ বদলে যায়। “টিকটক থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সে সম্পর্কে জড়ায়, এমনকি থাইল্যান্ড থেকে এক যুবক পর্যন্ত চলে আসে।”
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি তিনি তোলেন নিজের স্ত্রীকে নিয়ে। তারেক বলেন, “দুই মাস আগে আমার স্ত্রীকে বাসায় খুঁজে না পেয়ে রাজীব নামে এক ভাড়াটিয়ার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি, তারা একসঙ্গে শুয়ে আছে। আমি তাৎক্ষণিক কয়েকটা চড় মারি, রাজীব পালিয়ে যায়।”
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা পরকীয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তারেক বলেন, “ও যদি একটাও প্রমাণ দিতে পারে, আমি ফাঁসি নিতে রাজি। ওর মোবাইলের হিস্ট্রি খুললেই সব প্রমাণ পাওয়া যাবে।”
অনলাইন জুয়া খেলার অভিযোগও অস্বীকার করে তারেক বলেন, “আমি অসুস্থ, কিছু একটা করার জন্য ছেলের পরামর্শে একটা গেমস খেলি যেখানে কয়েন জমিয়ে ডলার পাওয়া যায়। এটা জুয়া নয়।”
তিনি আরও জানান, “টুনির দায়ের করা যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলায় আমাকে ৪০ দিন জেলে থাকতে হয়। আমার মা-বাবাকে তাড়িয়ে দিয়েছে, আমার জামিন হয়েছে ছোট ভাইয়ের সহায়তায়। আমি কিডনি রোগী, ওষুধ ছাড়া বাঁচা কঠিন, আর ওরা আমাকে পরিকল্পিতভাবে শেষ করতে চেয়েছিল।”
শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে স্ত্রীর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তারেক বলেন, “ওই যদি ঠিক হয়, তাহলে আমি কিভাবে অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে যাব? ওসব সাজানো কথা।”
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে কলেজপড়ুয়া টুনির সঙ্গে মালয়েশিয়া প্রবাসী তারেকের বিয়ে হয়। এক বছর পর তাদের ঘরে আসে এক পুত্রসন্তান। তবে ২০০৮ সালে তারেক অসুস্থ হয়ে পড়েন, আর সেখান থেকেই শুরু হয় সম্পর্কের টানাপোড়েন, যার জটিলতা এখন সমাজজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
বর্তমানে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সামাজিকমাধ্যমে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া—কেউ স্ত্রীর প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছেন, কেউ বা স্বামীর বক্তব্যকে সত্য হিসেবে গ্রহণ করছেন। ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটিই দেখার বিষয়।

