গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশ শেষেও শান্তি ফেরেনি। বুধবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এনসিপির পদযাত্রার ওপর ফের হামলার ঘটনা ঘটে। এনসিপির দাবি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে। পরিস্থিতির অবনতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা আশ্রয় নিয়েছেন গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউসে।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেসময় মঞ্চে থাকা সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ করে এনসিপির নেতাকর্মীরা। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, এবং সমাবেশস্থলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী জানান, “আমরা যখন গোপালগঞ্জ থেকে পদযাত্রা শুরু করি, তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ কর্মীরা এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। বাধ্য হয়ে আমরা সার্কিট হাউসে আশ্রয় নিই।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান বিকেলের হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘জুলাই পদযাত্রা’ কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।”
এদিন সকালেই ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার শুরু হয়। ইউএনও’র গাড়িবহরে হামলা, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ওই সময় থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী।
গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া সড়ক, টেকেরহাট সড়ক ও টুঙ্গিপাড়ায় ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর এপিসি (আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার) মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সেনাবাহিনী সাতজনকে আটক করেছে, যদিও তাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, এনসিপির এই ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার গোপালগঞ্জে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শিরোনামে পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচিকে ‘গণজাগরণমূলক’ বলে আখ্যায়িত করা হলেও সংঘর্ষ, হামলা ও উত্তেজনার মধ্যে তা সম্পন্ন হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একাধিক সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারি জারি রয়েছে।



