রেমিট্যান্স-রপ্তানির অভূতপূর্ব উত্থান, ডলারের দামে বড় ধস

প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের প্রবল স্রোতে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা শক্তিশালী হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১০ দিনের পরিসংখ্যান বলছে, ডলারের দর একটানা কমেছে, যা দেশীয় মুদ্রার জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি কমার পাশাপাশি আমদানি খরচ ও বৈদেশিক দেনা পরিশোধেও চাপ হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে মার্কিন ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি হয়েছে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা ১০ পয়সায়। যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগেও এই দর ছিল ১২২.৮০ টাকা থেকে ১২২.৯০ টাকা। ১৪ জুলাই ডলারের দর নেমে আসে ১১৯ টাকায়, যা গত ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ এমন দর দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের আগস্টে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাজারে আস্থা ফিরেছে। এর ফলে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি—উভয় খাতেই দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহও ছুঁয়েছে নতুন রেকর্ড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৬.৮০ শতাংশ বেশি। এছাড়া চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৭১ মিলিয়ন ডলার। এই সময়ের গড় দৈনিক রেমিট্যান্স ছিল ৮৯.২৫ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, গভর্নরের নির্দেশনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধ করেছে। ফলে আর কোনো ব্যাকলগ বা বকেয়া নেই। বর্তমানে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় বাজারে ডলারের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারসাম্য তৈরি হওয়ায় এবং আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রিত থাকায় ডলারের ওপর চাপ কমেছে। এতে দেশীয় মুদ্রা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।

Scroll to Top