আদালতে যা বললেন সোহাগ হ”ত্যা মামলার আসামি টিটন

ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার মো. টিটন গাজীকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ গিয়াসের আদালত এই আদেশ জারি করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে শুনানি শুরু হলে বিচারক আসামি টিটন গাজীকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনার কিছু বলার আছে কি?”

এরপর তিনি বলেন, “হ্যাঁ স্যার, আমার কোনো আইনজীবী নেই। আপনি (বিচারক) যে ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখেছেন, সেখানে আমাকে দেখা যাচ্ছে। আমি কাউকে আঘাত করেনি। আমাকে মোবাইলে ফোন করে ডাকা হয়েছিল। ফোন পেয়ে সেখানে যাই। আমি কাউকে আঘাত করিনি। ভিকটিমকে আঘাত করার জন্য হুকুমও দেয়নি। আমি শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমি নির্দোষ স্যার। পরে বিচারক শুনানি শেষে আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে, শুক্রবার রাত ১টার দিকে কোতোয়ালি থানার জিন্দাবাহার এলাকা থেকে টিটন গাজী (৩৩) নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এই মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও, এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

৯ জুলাই সোহাগকে তার বাড়ি থেকে ডেকে জনসমক্ষে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পুরো দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু লোক প্রথমে সোহাগকে নির্মমভাবে মারধর করে, তারপর তাকে কেটে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর দুই যুবক তার নিথর দেহ রাস্তার ধারে টেনে নিয়ে যায় এবং একের পর এক লাথি, ঘুষি এবং বুকে লাফিয়ে পড়ে। পরে তার মাথায় এবং শরীরে বড় বড় পাথর ছুঁড়ে মারা হয়। ঘটনার সময় শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

এই ঘটনায় অভিযোগকারী হিসেবে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর বোন মঞ্জুয়ারা বেগম। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় স্ক্র্যাপ মেটাল ব্যবসার পাশাপাশি পুরাতন বৈদ্যুতিক তার কেনা-বেচার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। ওই এলাকায় একটি সিন্ডিকেট আছে যারা তামা ও সাদা বৈদ্যুতিক তারের ব্যবসা করে। এটি সোহাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তবে, মহিন ও টিটু নামে আরও দুজন এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিলেন। তারা ব্যবসার ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চাইছিলেন। অন্যথায়, তারা নিয়মিত অর্থ প্রদানের দাবি করেছিলেন। এই বিরোধের সূত্রপাত হয়।

Scroll to Top