প্রকাশ্যে সেই হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল

বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে পাকা সড়কে চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে নৃ*শংসভাবে হ*ত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লোম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, রবিন আলী, রবিন আলী, ইসলাম আলী, মিজানুর রহমান, মো. মামলায় আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এই ভয়াবহ ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন রিমান্ডে রয়েছেন। এছাড়াও, এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কারণে যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রাক্তন জলবায়ু বিষয়ক উপ-সম্পাদক রজব আলী পিন্টু এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবাহ করিম লাকিকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

নিহতের পরিবার দাবি, বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে সোহাগের বাসায় খাওয়া-দাওয়া করে টিটু। ভাত খাওয়ার সময় টিটু সোহাগকে বলে সব মিটমাট করে ফেলবে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই যেন ব্যবসা করা যায়, সেজন্য সবার সঙ্গে বসে একবার কথা বললেই হবে। এই কথা বলে টিটু সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করা ৪০ থেকে ৫০ জন সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

হ*ত্যার পুরো দৃশ্যটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু লোক প্রথমে সোহাগকে নির্মমভাবে মারধর করে, পরে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর দুই যুবক তার নিথর দেহ রাস্তায় টেনে নিয়ে এসে একের পর এক লাথি, ঘুষি ও বুকের ওপর লাফিয়ে বর্বরতা চালায়। পরে তার মাথা ও শরীরের ওপর ছোড়া হয় বড় বড় পাথর। ঘটনার সময় শত শত মানুষ আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে যে নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় স্ক্র্যাপ মেটাল ব্যবসা এবং পুরাতন বৈদ্যুতিক তার বিক্রির সাথে জড়িত ছিলেন। এলাকায় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে যারা তামা এবং সাদা বৈদ্যুতিক তার বিক্রি করে। এটি সোহাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। তবে, মহিন এবং টিটু নামে আরও দুজন এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছিল। তারা ব্যবসার ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। তা না হলে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা। এর জেরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

এদিকে, হত্যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে, দেশজুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নাগরিক সমাজের মতে, যদি এই ধরনের নৃশংসতার প্রকাশ্যে বিচার না করা হয়, তাহলে সামাজিক নিরাপত্তা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

Scroll to Top