ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার উদ্যোগে গতি আনছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির কাছে ঘোষণাপত্রের খসড়া সম্প্রতি আবারও পাঠানো হয়েছে। দলটি তার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করে কিছু সংযোজন-বিয়োজনসহ সংশোধিত একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তা সরকারকে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিএনপির এই দায়িত্বে রয়েছেন সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক দু’টিতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠকে বিএনপি নেতারা জানান, ‘ছাত্রদের মতো আমরাও চাই, জুলাই ঘোষণাপত্র দ্রুত চূড়ান্ত হোক।’ তারা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণাপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। তবে সরকারের তরফে সে সময় বলা হয়, তাদের কোনো প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা নেই। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়ে দেন—সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র তৈরির কাজ করছে।
এর ধারাবাহিকতায় সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে খসড়া পাঠায়, যার ওপর মতামত দেয় বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল। ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এই খসড়াকে কেন্দ্র করে।
তবে এরপর এই প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলায় ক্ষোভ বাড়ে বিভিন্ন মহলে। গত ৩০ জুন ঘোষণাপত্র বিলম্বের প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জুলাই আন্দোলনে আহত ছাত্ররা।
এদিকে জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকারকে ৩ আগস্টের মধ্যে ঘোষণাপত্র ঘোষণা করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। অন্যথায় ওইদিনই তারা নিজেরা “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র” প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে।



