সরকারি অনুদানের নামে লাখ টাকা আত্মসাতের পর সমন্বয়ক বললেন ‘ভুল হয়েছে’

গাজীপুরের কালীগঞ্জে সরকারি ঘর ও পানির পাম্প দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. রাকিব চৌধুরী (২৬) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অন্তত চারজন ভুক্তভোগী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, রাকিব নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে পরিচিত করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন। প্রতারণার শিকাররা হলেন—সাফির উদ্দিন শেখ, মো. সারোয়ার, মোসা. সালেহা বেগম এবং হোসেন মিয়া। এদের কাছ থেকে তিনি প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা আদায় করেন।

ভুক্তভোগীদের দাবি, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কেউ ঘর বা পানির পাম্প পাননি। টাকা ফেরত চাইলে রাকিব হুমকি দিয়ে বলেন, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটাবেন। একাধিক স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত এক বছর ধরে রাকিব একইভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযুক্ত রাকিবের বাবা আলাউদ্দিন চৌধুরীকেও এতে জড়ানো হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ আহমেদ কবির বুলবুল জানান, রাকিব বর্তমানে পলাতক। পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফোনে কথা বলেছে।

এদিকে অভিযুক্ত রাকিব মোবাইলে যোগাযোগ করলে বলেন, “আমি ভুল করেছি। আটজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। কাজ হয়নি, টাকা ফেরত দেবো। তবে এসব বিষয়ে আমার বাবার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”

প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর গাজীপুর জেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, রাকিবের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। সে যে নিজেকে সমন্বয়ক বলেছে, তা মিথ্যা।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।” থানার এসআই মো. হাবীবুর রহমান জানান, অভিযুক্ত ফোনে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এবং টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Scroll to Top