ট্রাইব্যুনালে প্রথম কারাদণ্ড পেলেন শেখ হাসিনা

আদালত অবমাননার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে যথাক্রমে ছয় মাস ও দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (২ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

গত ৩০ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও শাকিল আহমেদের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে মামলার বাদী ও সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানো, তাদের বাড়িঘর ভাঙচুরের নির্দেশ, এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হুমকির বিষয় উঠে আসে। এ বক্তব্যকে বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ এবং আদালতের মর্যাদাহানির শামিল হিসেবে চিহ্নিত করে আদালত।

ওই অডিওর ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল গত ৩০ এপ্রিল তাদের ব্যাখ্যা চেয়ে হাজির হতে নির্দেশ দেয়। ২৫ মে নির্ধারিত দিনে তাঁরা হাজির না হওয়ায় এবং কোনো আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা না দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। এরপরও তাঁরা অনুপস্থিত থাকেন।

পরবর্তীতে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আমিনুল গনি টিটুকে এবং আদালতকে সহায়তাকারী হিসেবে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এওয়াই মশিউজ্জামানকে নিযুক্ত করা হয়। আজকের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল তাদের অনুপস্থিতিতেই দণ্ডাদেশ ঘোষণা করে।

চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ২২৬টি মামলা চলমান রয়েছে। ভাইরাল অডিওতে শেখ হাসিনা শাকিল আহমেদকে বলেন, “যারা মামলা করেছে, তাদের মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।” এতে তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করেন, তারা সাক্ষীদের ভয় দেখিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছেন।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী, শেখ হাসিনাকে ছয় মাস এবং শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে উভয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে এই আদেশ অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ নিতে পারবে।

এই রায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আদালতের সম্মান রক্ষায় এমন রায় যুগান্তকারী বলেও মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবীরা।

Scroll to Top