গত ২০১৯ সালের ২৬শে জুন বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় প্রকাশ্যে দিবালকে রিফাত শরীফ হ’ত্যার ঘটনায় পুত্রবধু আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ। এরপর দীর্ঘ ১৫ মাস এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। এ রায়ে মিন্নিসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
এউ মুহুর্তে অসুস্থ অবস্থায় কাশিমপুর কারাগারে আছেন মিন্নি। গত ১ বছর ধরে করোনার কারণে তার বাবা-মা কারাগারে গিয়ে দেখা করতে পারছেন না। বিভিন্ন রোগে ভুগলেও তার চিকিৎসা হচ্ছে না। ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান ১০ আসামির মধ্যে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, মিন্নিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এক নম্বর সাক্ষী থেকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি তার মেয়ের চিকিৎসা করানোর সুযোগ চান। তিনি প্রধান বিচারপতি, কারা মহাপরিদর্শক ও মানবাধিকার কমিশনের কাছে মিন্নির চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো সুব্যবস্থা হয়নি।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীন বলেন, মানবাধিকারের বিবেচনায় মিন্নিকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক।
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেও একজন মানুষ হিসেবে মিন্নিকে চিকিৎসার সুযোগ দিতে প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের সভাপতি আবদুর রব ফকির বলেন, জেল কোড অনুযায়ী মিন্নির চিকিৎসা করানো দরকার।
সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা কাদের বলেন, চিকিৎসার অধিকার একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। জেলখানার কয়েদি হলেও তার চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে।
কলেজ শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তার কাজল বলেন, মিন্নি অপরাধী হলেও তার চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক।
মিন্নির পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দীর্ঘদিনেও আপিলের শুনানি হয়নি। আশা করছেন মিন্নি খালাস পাবেন। তার আগে আইন অনুযায়ী মিন্নিকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হবে বলে আশাবাদী।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে গত বছর দুই থেকেই মিন্নিকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে নির্দোষ দাবি করা হলেও মিন্নিই এ ঘটনার মূল হোতা বলে মনে করছেন নেটিজেনরা। আর তাই উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তারা।