Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / National / খালেদা জিয়া উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন : চিকিৎসকরা

খালেদা জিয়া উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন : চিকিৎসকরা

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তেমন একটা ভালো নয়। নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, শরীরিক দিক দিয়ে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। এমনকি নিজ হাতে কোনো কিছু উঠিয়েও খেতে পারছেন না এই নেত্রী। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।

তবে এই মুহুর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও তিনি উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক টিমের সদস্যরা।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার চিকিৎসক টিমের একজন সদস্য জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের মতোই আছে। উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো উন্নতিও হয়নি, আবার অবনতিও হয়নি।

তিনি বলেন, ওষুধ প্রয়োগের কারণে খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ কমেছে। তবে, এটা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। পুরোপুরি সুস্থতার জন্য তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে হবে। তার ইলেক্টোরাল ব্যালেন্স এসেছে। অর্থাৎ শরীরে খনিজের সমতা বিরাজমান। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। এখন রক্তের হিমোগ্লোবিন ৮ দশমিক ৫০ আছে। তবে, ম্যাডামের মুখ শুকনো, চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। কথা খুব আস্তে ধীরে বলেন।

সূত্র জানায়, শাশুড়ি খালেদা জিয়াকে দেখতে প্রতিদিনই হাসপাতালে আসছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, বাসা থেকে খাবার রান্না করে নিয়ে গেলেও তেমন কিছু খেতে পারেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জানা গেছে, গতকালও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের একাধিক রুটিন টেস্ট করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, যত দ্রুত তাকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া যায় ততই মঙ্গল। তা না হলে ঝুঁকি বাড়বে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের সদস্য প্রফেসর ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন রোববার সকাল ১০টায় জানান, ম্যাডাম এখনও ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে আছেন। মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। উনার পুনরায় যেন রক্তক্ষরণ না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। ওষুধ দেওয়ার পরে কি ধরনের পরিবর্তন হয় সেটা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।

উনি ঝুঁকিতে আছেন কিনা জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, উনি পুরো মাত্রায় ঝুঁকিতে আছেন। আমরা যেটাকে আনপ্রেডিক্টেবল বলি। অর্থাৎ উনার অবস্থা কখন খারাপের দিকে যাবে বা যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে বা ভালো হবে এটা কিন্তু আগে থেকে হলফ করে বলার অবস্থা নেই। উনি ঝুঁকিতে আছেন এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই।

রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনার ক্রনিক লিভার ডিজিজের সঙ্গে মেলিনা যেটা ছিল সেটা সত্যিকার অর্থে বন্ধ হয়েছে মানে ওষুধ চলতেছে। ওষুধ বন্ধ না হলে বোঝা যাবে যে, ওটা বন্ধ হয়েছে কি হয়নি। ওষুধের কারণে যদি কোনো জিনিস বন্ধ থাকে তখনতো আর বলা যায় না যে ওটা বন্ধ হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোর্ডের আরেকজন সদস্য জানান, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কারণে খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ কমে আসছে। এই অবস্থা ধরে রাখতে পারলে এই সপ্তাহের মধ্যে কেবিনে নেওয়া সম্ভব। তবে আশঙ্কার কথা হলো, যে কোনো সময় তা বেড়ে যেতে পারে। এজন্যই ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না। স্বস্তির খবর হলো, ইলেকট্রোরাল ব্যালেন্স এসেছে। অর্থাৎ শরীরে খনিজের সমতা বিরাজমান। এটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। ইনসুলিন দিয়ে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।

শনিবারও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি নেত্রীর স্বাস্থ্যের একাধিক রুটিন টেস্ট করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, যত দ্রুত তাকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া যায় ততই মঙ্গল।

এর আগে টানা ২৬ দিন রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন বিএনপির গুণী এই নেত্রী। কিন্তু দিন শেষে আবারও অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে আসতে হয়েছে তাকে। তার অসুস্থতায় রীতিমতো ব্যথিত নেতাকর্মীরা।

About

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *