জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উপর লাঠিচার্জের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার নবনিযুক্ত অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) হাসমত আলীর বিরুদ্ধে গোপনে থানা ত্যাগের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৫ জুন) সকালে তিনি চলে যান। এর আগে, তিনি ১৩ জুন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে থানায় যোগদান করেন। তবে, পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানিয়েছেন যে ক্ষেতলালের ওসি হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, থানার এসআই হাসমত আলী জয়পুরহাট শহরে তৎকালীন জেলা জামায়াত সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ জামায়াত-শিবির কর্মীদের মিছিলে লাঠিচার্জ করছেন।
তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন। জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি ৫ নভেম্বর, ২০১২ সালের। ওই দিন জয়পুরহাট শহরে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। জয়পুরহাট সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী লাঠিচার্জ করে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীদের গুরুতর আহত করেন। একই দিনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শিবিরের সহকর্মী বদিউজ্জামান।
ওই ঘটনার ১৩ বছর পর, এই মাসের ১৩ জুন হাশমত আলী ক্ষেতলাল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। ১৩ বছর আগে মঙ্গলবার রাতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের উপর নৃশংস লাঠিচার্জের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর আজ বুধবার সকালে ওসি হাসমত আলী গোপনে থানা ত্যাগ করেন।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া মন্ডল বলেন, ২০১২ সালে জয়পুরহাটে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন এসআই হাশমত আলী। সেই সময় তিনি আমাদের দলের জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম স্যারসহ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বেধড়ক মারধর করেন। সেদিন গুলিতে আমাদের ভাই বদিউজ্জামান শহীদ হন।
অনেক দিন পর হাশমত আলী পদোন্নতি পেয়ে ক্ষেতলালের ওসি হিসেবে যোগদান করেন। সেদিনের তার আচরণ আমরা কখনো ভুলব না। আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের মারধরের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ওসি হাশমত আলী থানা ছেড়ে চলে যান।
আজ, বুধবার রাত ৯টায়, ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলীর অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে একটি কল করা হলে, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এস.এম. কামাল তা রিসিভ করেন। তিনি বলেন, ওসি সাহেব আজ সকালে আমাকে সরকারি ফোনসহ চার্জ বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশ লাইনসে যাওয়ার কথা বলেছেন। তিনি সম্ভবত এসপি স্যারের কাছে গিয়ে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেছেন।