শেখ হাসিনার পক্ষে লড়ার সুযোগ হারালেন আমিনুল, নতুন দায়ীত্ব পেলেন যিনি

জুলাইয়ের বিদ্রোহের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন পলাতক আসামি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমিনুল গণি টিটোর নিয়োগ বাতিল করেছে।

বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে নীতিগত প্রশ্নের কারণে আদালত অবমাননার মামলায় তাকে অপসারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রনিযুক্ত নতুন আইনজীবী হিসেবে আমির হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার আইনজীবী টিটোর বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি গোলাম মোর্ত্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

একই সাথে, মামলায় অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে আগামী বুধবার লিখিত বক্তব্য জমা দিতে বলেছে ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার, আমির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান যে, মঙ্গলবার তাকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আজই নিয়োগপত্র গ্রহণ করেছেন।

প্রসিকিউশন জানায়, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে আমির হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছিল যে আসামি শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন কিনা। জবাবে আইনজীবী টিটো বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “এটি আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমি একজন পেশাদার আইনজীবী হিসেবে আসামিদের পক্ষে আইনগতভাবে লড়তে চাই।

এর আগে, ১৯ জুন ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনা এবং গাইবান্ধার প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আমিনুল গণি টিটোকে নিয়োগ করে। একই সাথে, ট্রাইব্যুনাল ২৫ জুন পলাতক আসামির বক্তব্য শুনানির জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করে। এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল।

এতে বলা হয়েছে যে, আমিনুল গণি টিটো গত বছরের ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ যথারীতি ট্রাইব্যুনালে আসেন আমিনুল গনি টিটো ও অ্যামিকাস কিউরি এ ওয়াই মশিউজ্জামান। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এ ওয়াই মশিউজ্জামান বক্তব্য দিতে প্রস্তুতির জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে দুই সপ্তাহের সময় চান। এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহের সময় মঞ্জুর করে।

ট্রাইব্যুনাল এরপর রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আমিনুল গণি টিটোর বক্তব্য শুনেন। তার বক্তব্যের শুরুতে আমিনুল গণি টিটো বলেন যে, ৩৬ বছরের আইনি জীবনে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে নিযুক্ত হতে পেরে তিনি সম্মানিত বোধ করছেন। তিনি এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে আসামির পক্ষে আইনি লড়াই করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল তাকে জিজ্ঞাসা করে যে, আসামি শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের স্ট্যাটাস দিয়েছেন কি না। জবাবে আইনজীবী টিটো বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমি একজন পেশাদার আইনজীবী হিসেবে আসামিদের পক্ষে আইনগতভাবে লড়তে চাই।

এই পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলে,কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকায় এখন আর আপনি এ মামলায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে থাকতে পারেন না। এখানে ন্যায় বিচারের প্রশ্নে নৈতিকতা জড়িত। পরে তার নিয়োগ বাতিল করেন ট্রাইব্যুনাল।

Scroll to Top