প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একেএম নূরুল হুদাকে আরও আগেই গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। মৃত্যুদণ্ড হলেও, এটি তার অপরাধের তুলনায় কম শাস্তি: ড. জাহেদ উর রহমান।
রবিবার (২২ জুন) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন টকশোতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এই কথা বলেন।
ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, “যদি মৃত্যুদণ্ড কোনও শাস্তি হয়, তাহলে নুরুল হুদার জন্য মৃত্যুদণ্ড কম শাস্তি। আমি আবারও বলছি, আমি মনে করি না যে মৃত্যুদণ্ড তার জন্য যথেষ্ট শাস্তি।”
তার মতে, যারা ওইসব নির্বাচনগুলো করেছেন তাদের মধ্যে উনিও একজন সিইসি। বিশেষ করে ২০১৮ সালে ভয়ংকর নির্বাচন হয়েছে, ডাকাতি হয়েছে, রাতের ভোট হয়েছে সেই মানুষটার বিচারের আওতায় আসা খুবই জরুরি ছিল। আমি যখন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে কাজ করেছি, তখন একটা প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। সেটা ফাইনালি হয়তো আসেনি, কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে একটা কমিশন হওয়া দরকার।
ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে কীভাবে একটি দেশ ধ্বংস করা যায়, তা আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো না। তবে একটি বিষয় আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, আমি এটিকে গুরুত্ব দিতে চাই। শেখ হাসিনার সাথে যারা এই দেশ ধ্বংস করেছে, যারা ভূমিকা পালন করেছে, মানুষ হত্যা করেছে এবং কোটি কোটি মানুষের জীবন শেষ করে দিয়েছে, তারা তার সহযোগী। তাদের শাস্তি পেতে হবে।
উনি ক্রিমিনাল হতে পারেন, কিন্তু মানুষ দাবি করে এই বিশ্লেষক বলেন, একটি ভিডিও আমাদের সামনে এসেছে, উনাকে যখন পুলিশের সামনে গ্রেপ্তার করা হয় তখন তার গলায় জুতার মালা দেওয়া হয়েছে এবং তাকে জুতাপেটা করা হয়েছে। এটা অসভ্যতা, এটা বর্বরতা। আমরা আমাদের স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র সেখানে বলেছিলাম—সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের সমাজ তৈরি করব।
ড. জাহেদ আরও বলেন, আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে কোনও ব্যক্তিকে কোনওভাবেই অবমাননাকর শাস্তি দেওয়া যাবে না বা সেইভাবে আচরণ করা যাবে না। আমি প্রথম দিন থেকেই লক্ষ্য করছি, কিছু আওয়ামী লীগের অভিযুক্ত এবং আদালত প্রাঙ্গণে থাকা ভয়ঙ্কর ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চেয়ে কম অসৎ এবং ভয়ঙ্কর ব্যক্তি। কিন্তু আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের সামনে তাদের সাথে অবমাননাকর আচরণ করা হয়েছে। আমি এর বিরোধিতা করি।
তিনি বলেন, আমরা নুরুল হুদার বিচার চাই, আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। যদি বাংলাদেশে তাদের শাস্তি না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে দেশের কোনও সরকারেরই চোর-ডাকাত বা ১০০ জনকে হত্যাকারীকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার থাকবে না, যদি নুরুল হুদার বিচার না হয়।