“জিয়ার আদর্শ মানেই খু’ন-চাঁদাবাজি-অবিচার!” — ফয়জুল করিমের বিস্ফোরক মন্তব্য

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে-ই-আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, অনেকেই মনে করেন যে ভবিষ্যতে অমুক দল ক্ষমতায় আসবে, কিন্তু এটা মিথ্যা। বাংলাদেশের প্রায় ৩৮ শতাংশ নতুন ভোটার জানেন না যে ধানের শীষ কী। এ দেশের মানুষ জিয়াউর রহমান সাহেবের আদর্শ শুনতে চায় না।

তিনি বলেন, যখন নতুন ভোটারদের আদর্শ সম্পর্কে বলা হবে তখন তারা জিয়াউর রহমানের আদর্শ সম্পর্কে কী বলবে? জিয়াউর রহমানের আদর্শ মানে চাঁদাবাজি, হত্যা, অবৈধ দখল, নিপীড়ন, অবিচার।

শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় রংপুর শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর কেবল বিএনপিই ১২৭ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত আমরা জানতাম যে নরকের আগুন নরক গ্রাস করে। এখন আমরা দেখছি একটি বিএনপি অন্য বিএনপিকে গ্রাস করছে। ছাত্রদলের ছাত্ররা বিএনপির মূল দলের লোকদের কাছে চাঁদা চেয়েছে। চাঁদা তাদের না দেওয়ার কারণে হাত-পা ভেঙে ফেলেছে। যাদের কাছে দলের মানুষ নিরাপদ নয় তাদের কাছে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক নিরাপদ হতে পারে না।

তিনি বলেন, যে দলের একদল আরেক দলকে, এক সংগঠন তার অঙ্গ সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। সে দলের কাছে বাংলাদেশের কোনো ব্যবসায়ী নিরাপদ থাকতে পারে না। যে দলের মানুষ মানুষকে খুন করে সে দলের কাছে এ দেশের মানুষের জান-মাল নিরাপদ নয়। যে দল কাউন্সিল করতে পারে না, নিজেদের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পারে না- তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোনোভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, যারা নিজেরাই ঘোষণা দেয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে করো না হলে আমরাই করব। যারা নিজেরা আইন হাতে তুলে নেয় তাদের মাধ্যমে তাদের মাধ্যমে দেশের আইন নিরাপদ থাকতে পারে না।

বিএনপি নেতা ইশরাকের মেয়র হওয়ার বিষয়টি প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির ফয়জুল করিম বলেন, যারা মেয়র হওয়ার আগে নগর ভবন দখল করে, তাদের বাংলাদেশের মানুষের জীবন, সম্পত্তি এবং মর্যাদার নিরাপত্তা থাকতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ কোনও অবস্থাতেই তাদের মেনে নেবে না। ইশরাক সাহেবের আইনজীবীরা বিচারককে বলেছেন, যদি ইশরাকের পক্ষে রায় দেন তাহলে ওখানে থাকবেন, বসবেন। রায় না দিলে ওখানে বসতে পারবেন না। যারা জোর করে নিজেদের পক্ষে রায় নিয়ে আসে তাদের মাধ্যমে দেশের বিচারালয় কোনো দিন নিরাপদ থাকতে পারে না।

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম যদি বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে তাহলে আপনি অন্যায় করবেন না, জুলুম করবেন না। ক্ষমতায় আসলে কাউকে দাড়ি রাখতে বাধ্য করা হবে না, ইসলামের আহকামগুলো মানতে বাধ্য করা হবে না। কিন্তু আপনার মন চাইবে ভালো কাজগুলো করি।

এসময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। রংপুর-১ (গঙ্গাছড়া ও শহর আংশিক) আসনের প্রার্থী হিসেবে এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, রংপুর-৩ (সদর) আসনের জন্য মাওলানা মো. আশরাফ আলী, আমিরুজ্জামান পিয়াল, রংপুর-(কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনের জন্য মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন এবং রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের জন্য মোহাম্মদ গোলজার হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অ্যাডভোকেট এম হাসিবুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রংপুর জেলা শাখার সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু প্রমুখ।

Scroll to Top