কালো টাকা এখন সাদা হয় কোন যুক্তিতে? ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ বাস্তবায়নের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি: ফরহাদ মজহার

ড. ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্বকে জাতীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। এই থ্রি জিরো বাস্তবায়নের জন্য গণঅভ্যুত্থান ঘটেনি। আমি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে ইউনূস ভাইকে বলছি, এটা তার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে। এই বাজেটে তারা বলছে থ্রি জিরো বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু এটার জন্য আমরা গণঅভ্যুত্থানটা করি নাই।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খান হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত বাজেট সংলাপ ২০২৫-এ কবি ও রাষ্ট্রনায়ক ফরহাদ মাজহার এই কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভিন্ন ধরণের বাজেট চেয়েছি। যেখানে লুটপাট ব্যবস্থাকে অবৈধ বলা হবে। যদি আমরা তা পাই, তাহলে তা যথেষ্ট হবে। আর তার যে ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ সে সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য আছে আলাদা। সেটা আমরা আলাদা করবো। এটা একটা ব্যক্তির স্বপ্ন। আমরা এটার প্রশংসা করি। কিন্তু আমাদের কথা তার এই তত্ত্ব বাজেট প্রস্তাবনায় কেন? আন্তর্জাতিকভাবে এটার খ্যাতি থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে এই তত্ত্ব সঠিকভাবে নেই। এটা আলোচনার অধিকার আমাদের আছে। তাকে অসম্মান করার জন্য বলছি না, তবে এটা যদি তিনি বাজেটে ঢোকান তাহলে তিনি অসম্মানিত হবেন।’

ফরহাদ মাজহার আরও বলেন, ‘এটি একটি নির্বাচিত সরকার, তবে এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু নির্বাচিত, অনির্বাচিত না। আমাদের লুটেরা-মাফিয়াতন্ত্রওয়ালারা বলে এটা অনির্বাচিত সরকার। এটা নির্বাচিত সরকার; এটা আমরা মেনে নিয়েছি কেন… যেহেতু আমরা মনে করি, জনগণ তাদের এটা দিয়েছে। কাজেই এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মাজহার বলেন, ‘আমি মনে করি এই বাজেট আমাদের যথেষ্ট সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আমরা বাজেটে যে মনোভাব দেখতে চেয়েছিলাম তা আমরা দেখতে পাইনি। এটি একটি পুরানো টেকনোক্র্যাটিক অনুশীলন বলে মনে হচ্ছে। লুটপাট শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে দৃশ্যমান দিক হল – কালো টাকা সাদা করা। অবশ্যই, এটি সংশোধন করা দরকার। কালো টাকা এখন সাদা হয় কোন যুক্তিতে? গণঅভ্যুত্থানের পরে এটা করবার কোনো যুক্তি নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটে সেনাবাহিনীর জন্য আমরা কীভাবে খরচ করি, প্রতিরক্ষা জন্য তার কোন স্পষ্ট উল্লেখ নেই৷। এটি হতে পারে না। অবশ্যই, আমাকে একটি জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর তা গড়ে তুলতে হলে তার জন্য আমার খরচ আছে। এটি একটি ন্যায্য ব্যয়। আমি কোথা থেকে সেই ব্যয় সংগ্রহ করব, কে এর জন্য অর্থ প্রদান করবে? এটা তো একটা থাকতে হবে, যে টাকাটা কোথায় খরচ হচ্ছে?’

ফরহাদ মাজহার আরও বলেন, ‘লুটেরা শ্রেণী আমলাতন্ত্র বজায় রাখার জন্য তাদের অর্থের সামান্য অংশ ব্যয় করে। এখন আবার দেখবেন যে, গণভোটের পরে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার নামে আমলাতন্ত্রকে রেখে দেয়। একটা ছোট্ট শব্দ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। তারা বলে এটা রাখতে হবে, এর নামে আমলাতন্ত্র কে রেখে দেয়। ৮ তারিখে (গত বছরের ৮ আগস্ট) যে একটা সরকার করলেন, লুটপাটতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্যই। কিন্তু আপনি এই একটা সরকার করেছেন। এই সরকারের আসলে কিন্তু কোন ক্ষমতা নেই। এখন যে টিকে আছে, এটা বিরাট ব্যাপার, দোয়া করেন।’

Scroll to Top