বিএনপিই প্রথম দেশে ভারতবিরোধী আন্দোলন শুরু করে: যুবদল সভাপতি

বিএনপি ভারতকে খুশি করার জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়—এমন দাবির প্রেক্ষিতে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না বলেন, “বাংলাদেশে ভারতবিরোধী আন্দোলনের সূচনা আমরাই প্রথম করেছি। কিন্তু ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনে হামলার পর কেউই লংমার্চ করেনি। আমরাই—যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল—লংমার্চ করেছিলাম। আমরা আখাউড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত গিয়েছিলাম। যারা এখন (এনসিপি) বড় বড় কথা বলছে, তারা প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও দেখায়নি।”

তিনি আরও বলেন, বিএনপি তিস্তা চুক্তিতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আন্দোলন করেছে। “কিছুদিন আগে তিস্তার ন্যায্য পানির অধিকার আদায়ে বিএনপি ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করেছে। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপি যে সমাবেশ করেছে, সেখানে ১০ লাখের বেশি সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল। সেই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতটা শক্ত ভারতবিরোধী অবস্থানের পর আমরা কীভাবে ভারতের দালালি করছি? না কি ওরাই করছে (এনসিপি)? ওদেরকে জিজ্ঞাসা করুন।”

তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর রহমানও ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে লংমার্চ করিয়েছিলেন। সুতরাং ভারতবিরোধী অবস্থানে আমরাই আছি। আমরা প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই, তবে প্রতিবেশী কী বললো সেটির ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেই না। আমরা নির্বাচন চেয়েছি—তাদের বক্তব্যের সঙ্গে আমাদের বক্তব্য মিলে গেল কি না, সেটা হিসাব করে বলিনি। আমরা আমাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে কথা বলছি।”

কয়েকদিন আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, “যারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছে, তারা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করছে। তরুণ সমাজ এ ধরনের হুমকি মেনে নেবে না। যারা ক্ষমতার লোভে বেহুঁশ হয়ে আছেন, তাদের হুঁশে ফেরার আহ্বান জানাই।”

নাসির উদ্দীন পাটোয়ারীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না বলেন, “আমরা নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো বেহুঁশের মতো আচরণ করছি না। তারা করছে, যেভাবে অল্প পানির মাছ গভীর পানিতে পড়লে ছটফট করে। আমি কিন্তু মিস্টার পাটোয়ারীকে বলেছি, কথাবার্তা সংযতভাবে বলেন। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তারা নির্বাচনের মাঠে না নেমেই ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাহলে কারা আসলে বেহুঁশ? আমরা তো জনগণের ম্যান্ডেট চাইছি, ভোটাধিকার চাইছি। এখানে তো কোনো অস্বাভাবিক কথা বলছি না। আপনি জনগণ, আমিও জনগণ। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার চাইছি—এই কথার মধ্যে অন্যায় কোথায়? বেহুঁশ তো ওরাই হচ্ছে। তাদের একজন উপদেষ্টা বলেছিল, এনসিপির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে ৩১ মে এক ক্যাফে-রেস্টুরেন্টে গোপন বৈঠক কেন হলো? সেখানে তাসনিম জারা ছিল, আসিফ মাহমুদ ভূইয়া সজিবও ছিল। তাহলে কারা কথা ও বাস্তবতার সঙ্গে অমিল করছে?”

তিনি আরও বলেন, “তারা তো কোনো রাজনৈতিক আচরণ করছে না। রাজনৈতিক আচরণ তো আমরাই করছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রতিটি বক্তব্যে মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেও সম্মান দিয়ে কথা বলেন।”

Scroll to Top