চট্টগ্রাম নগরীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে অবশেষে আশার আলো দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিপাতের ফলে জলমগ্ন মুরাদপুর, চকবাজার এবং কাতালগঞ্জ এলাকার চিত্র এবার ভিন্ন। যদিও ৩০ মে, ২০২৫ তারিখে ২৪ ঘন্টায় ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল, তবুও এই এলাকায় উল্লেখযোগ্য জলাবদ্ধতা ছিল না। তবে, গত বছর, একই পরিমাণ বা তার কম বৃষ্টিপাত হলেও, এই এলাকাগুলিতে হাঁটু পর্যন্ত জলাবদ্ধতা থাকত।
জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৮.৫ বিলিয়ন টাকা মূল্যের প্রকল্পটি প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চারজন উপদেষ্টাকে বিশেষ দায়িত্ব দেন। এরপর তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে খাল ও ড্রেনের অবস্থা পরিদর্শন করেন এবং ৮টি স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেন, বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে ১৭টি খাল খননসহ সমন্বিতভাবে কাজ চলছে। তারই অংশ হিসেবে নালার ওপর নির্মিত অবৈধ মার্কেট ভেঙে ফেলা, খাল-নালার সংস্কার ও মাটি অপসারণের ফলে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত হওয়ায় এবার দেখা যাচ্ছে বাস্তব সুফল।
মুরাদপুর এলাকার একটি ভবনের একজন প্রহরী বলেন, “সারা রাত বৃষ্টি হলেও কোথাও জল জমেনি।” চকবাজার এলাকার এক দোকানদারেরও একই অভিজ্ঞতা, তিনি বলেন, “গত রাতে দোকানে সামান্য জল থাকলেও তা সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে, গত বছরের মতো কোনও দুর্ভোগ হয়নি।”
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্যানিটেশন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আমরা ড্রেনগুলিকে খালের সাথে সংযুক্ত করেছি, মাটি খনন করেছি। এবার জল প্রবাহের পথ পরিষ্কার রাখায় কোথাও জল জমেনি।”
এছাড়াও কাতালগঞ্জসহ আরও তিনটি এলাকায় এবার উল্লেখযোগ্য জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। কোথাও কোথাও অল্প পানি জমলেও দ্রুতই নেমে গেছে।
সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে যে সঠিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের কারণে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে নগরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।