ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএসের জন্য উত্তীর্ণ করতেন না তিনি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যাচেষ্টার মামলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সূত্রাপুর থানা পুলিশ।

সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, “আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”

মামলার বাদী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা অভিযোগ করেন, “এ ধরনের দলকানা শিক্ষকদের কারণেই স্বৈরাচারী আমলে শিক্ষক সমাজ কলঙ্কিত হয়েছে। আনোয়ারা বেগম বলতেন—আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তারা রাজাকার। যেহেতু ছাত্রদল-শিবির আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাই তারা রাজাকার এবং তাদের গুলি করে মারা উচিত।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “তিনি পিএসসির সদস্য থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএসের জন্য উত্তীর্ণ করতেন না। তার মতো আওয়ামী দোসরের সঠিক বিচার চাই। তারা ছাত্রলীগের মাফিয়াদের পুলিশ প্রশাসনে নিয়োগ দিয়ে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে অর্থ দিয়ে ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করিয়েছেন।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম আজ ক্যাম্পাসে আসবেন—এ তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানত না। এমনকি তার বিরুদ্ধে মামলা আছে তাও আমরা অবগত ছিলাম না। পুলিশ তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করেছে বলে শুনেছি।”

উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হন জবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা। এই ঘটনার পরপরই একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের ৯৪ জন নেতাকর্মীর নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Scroll to Top