বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র মাসুদ বিন সাঈদী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তৃতীয়বারের মতো সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি জানান, নির্বাচনি আইন ও বিধিনিষেধ সম্পর্কে জানতে নির্বাচন কমিশনে এসেছিলেন।
বুধবার (২৮ মে) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী প্রথমে সিইসি এবং পরে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন সাবেক ইন্দুরকানি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন সাঈদী সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, “আইন-কানুন জানার জন্যই এসেছিলাম।” তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
জানা গেছে, তিনি পিরোজপুর-১ আসনের বর্তমান সীমানা বহাল রাখার আবেদন জমা দিয়েছেন। বর্তমানে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। প্রয়াত দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ১৯৯৬ সালের জুন এবং ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে একই তিনটি উপজেলা নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশন ইন্দুরকানিকে পিরোজপুর-২ আসনে সংযুক্ত করে এবং নেছারাবাদকে পিরোজপুর-১ এ যুক্ত করে সীমানা পুনর্বিন্যাস করে। ইন্দুরকানি ও পিরোজপুর সদর জামায়াতের ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এই পরিবর্তন আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক ছিল।
তবে ২০২৩ সালে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন পূর্বের সীমানা পুনরায় বহাল রাখে, যেখানে ইন্দুরকানি পুনরায় পিরোজপুর-১ এ যুক্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত যেন বহাল থাকে, সেই উদ্দেশ্যেই মাসুদ বিন সাঈদী বারবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।
নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, পিরোজপুর-১ আসনের সীমানা সংক্রান্ত একটি আবেদন জমা পড়েছে। সেখানে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের রায় এবং ২০২৩ সালের ১৪ মে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বর্তমান সীমানা—পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানি—বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করে ইন্দুরকানি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মাসুদ বিন সাঈদী। ইন্দুরকানি তখন ‘জিয়ানগর’ নামে পরিচিত ছিল।
সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যুবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, পিরোজপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ এবং বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দীন সরকার।