উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডড. মোহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবির জন্য কার্যত বিক্ষোভকারীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, এই বাধা এবং ক্রমাগত চাপের কারণে প্রধান উপদেষ্টা এক পর্যায়ে তার পদ থেকে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
এক সাক্ষাৎকারে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সরকারের এখন তিনটি প্রধান দায়িত্ব: সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংস্কার বাস্তবায়ন এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এগুলোর বাইরে গিয়ে একের পর এক অযৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসছে, যার ফলে সরকারের দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, “যেখানে-সেখানে এসে রাস্তায় দাবি দিচ্ছে, সব দাবি যৌক্তিক নয়। এটা আমাদের জন্য কঠিন করে ফেলেছে।”
সম্প্রতি, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আন্দোলনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আদালতের নির্দেশে আন্দোলন স্থগিত করা হলেও, সেই সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান উপদেষ্টা এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের সাথে দেখা করার পর সেই গুঞ্জন আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
ড. সালেহউদ্দিন আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেছেন নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে, “ডিসেম্বরের আগে নয়, জুনের পরেও নয়”। অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগে পুলিশ, ব্যাংক, এনবিআরসহ অর্থনীতির বিভিন্ন খাত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সংস্কার আনা হবে। সেইসঙ্গে জুলাই গণহত্যার বিচারকেও অগ্রাধিকার দেবে সরকার।
“আমরা চাই নির্বাচন এমনভাবে হোক যাতে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারে, ভোটাররা নিরাপদে কেন্দ্রে যেতে পারে এবং কেউ ভয় বা বাধার সম্মুখীন না হয়,” এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. সালেহউদ্দিন।
তার মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা গেলে দেশের অর্থনীতিও গতি পাবে। সরকারের জন্য এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। এবং সরকার এই লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।