নাটকীয় মোড় নিয়ে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের ধারণাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে, ২৪ ঘন্টা টানা উত্তেজনার পর সবকিছু শান্ত হয়ে যায়। উপদেষ্টা পরিষদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে অবশেষে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
যদিও ড. ইউনূস কখনও সরাসরি গণমাধ্যমের সামনে পদত্যাগের কথা বলেননি, তবুও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে আলোচনায় তার বিরক্তি এবং ক্লান্তি প্রকাশ পায়। আর সেখান থেকেই রটনার সূত্রপাত। তবে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের পেছনে তিনটি প্রধান শর্ত উঠে এসেছে, যা তিনি একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে স্পষ্ট করে দেন।
প্রথম শর্ত: উপদেষ্টাদের আরও সক্রিয় হতে হবে
ড. ইউনূস সাফ জানিয়েছেন—ক্যাবিনেট সদস্যদের আরও তৎপর হতে হবে এবং জনগণের সামনে একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন উপস্থাপন করতে হবে। কাজের গতি বাড়াতে হবে, যেন সাধারণ মানুষ উন্নতির স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি দেখতে পারে। কোনও ধরনের গাফিলতি বরদাশত করা হবে না বলেও তিনি সতর্ক করেছেন।
দ্বিতীয় শর্ত: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংলাপ
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ এবং মতবিনিময় জরুরি। সরকারের সঙ্গে দলগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন হলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। তাই তিনি প্রত্যাশা করেন, দলগুলোও দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং আন্দোলনের নামে জনজীবনে অরাজকতা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবে।
তৃতীয় শর্ত: সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে ড. ইউনূস উল্লেখ করেছেন—সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে জড়ানো চলবে না। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তবে একই সঙ্গে তিনি জুলাইয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার কথাও বলেন। হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নয়, বরং ভারসাম্যপূর্ণ নীতিই অনুসরণ করতে হবে বলে মত দেন তিনি।
অবশেষে, ড. ইউনূস দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানান এবং আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য এড়াতে অনুরোধ করেন।
যদিও এই তিনটি শর্ত সাময়িকভাবে সংকটের মেঘ দূর করতে পারে, তবে রাজনৈতিক আকাশ কতক্ষণ পরিষ্কার থাকবে তা সময়ই বলে দেবে।