পুলিশ সোমবার রাত ১২টার দিকে ধানমণ্ডির সড়ক নম্বর ৪ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ, তারা হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিক গোলাম মোস্তফার বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। তারা বাসার সামনে দাঁড়িয়ে গোলাম মোস্তফাকে আওয়ামী লীগের বন্ধু বলে অভিহিত করেন এবং তার গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
পরে গোলাম মোস্তফা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। পুলিশের সহায়তা চাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার (২০ মে) ওই তিনজনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তাদের মুক্তি দেওয়া হয় জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম প্রধান সমন্বয়ক হান্নান মাসুদের জিম্মায়। বিষয়টি ধানমণ্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেশয়নু নিশ্চিত করেন।
তিনজনকে পুলিশ স্টেশন থেকে এনসিপি নেতার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ দাবি করেন, হান্নান মাসুদ তাদের উদ্ধার করেছেন।
তবে ধানমণ্ডি থানার ওসি জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। ফলে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ ঘটনাটি ব্যাখ্যা করেন। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত রাতে একটি পোস্টে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন।
সে পোস্টে হান্নান মাসুদ জানান,মোহাম্মদপুর থানা বৈবিছাআর আহ্বায়কসহ তিনজনকে আটক করা হয় মবসৃষ্টির চেষ্টাকালে, যার ফলে বৈবিছাআ’র পরিচয়ে স্টুডেন্টরা ধানমন্ডি থানায় গিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছিলো। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধে আমি সেখানে যাই। সেখানে গেলে প্রশাসনের অনুরোধে বিষয়টির মধ্যস্থতা করি, যেহেতু প্রশাসন ওদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ রুজু করেননি এবং করতেও চাচ্ছিলো না।
তিনি আরো বলেন, তাছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী একটা মঞ্চের ব্যানারে নিয়মিত মব সৃষ্টি করা ব্যক্তিদের মধ্যেও একজন সেখানে ছিলো, যেটা পরবর্তীতে আমি জানতে পারি। এই বিষয়ে প্রশাসনকে পরিপূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে, ইনশাআল্লাহ এই মবসৃষ্টির মূলহোতারা দ্রুত এরেস্ট হবে।
ডিএমপিকে ওদের ব্যাপারে ইনফর্ম করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় আজ বুধবার হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। নোটিশের জবাব দিতে তাকে ৩ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডি থানার আওতাভূক্ত একটি আবাসিক এলাকায় সমন্বয়ক পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগে তিনজন ব্যক্তিকে আটক করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক উক্ত তিনজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিকে নৈতিকতা স্খলনজনিত কারণে অব্যহতি প্রদান করা হয়। এতদ্বসত্ত্বেও, আপনি সংশ্লিষ্ট থানায় উপস্থিত হয়ে আটক তিনজনের মুচলেকা প্রদান করে থানা থেকে তাদেরকে জামিন করিয়েছেন।’
এতে বলা হয়, ‘উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার ব্যাখ্যা এবং আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার লিখিত বিবরণ আগামী তিন দিনের মধ্য শৃঙ্খলা কমিটির প্রধানের নিকট উপস্থাপন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।’