ইউনূসের মন্তব্যে নড়েচড়ে বসল ভারত, সেভেন সিস্টার্স নিয়ে নয়া পরিকল্পনা

গত মার্চে চীন সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন যে সমুদ্রপথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য বাংলাদেশই একমাত্র ভরসা। একই সাথে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে চীনা অর্থনীতির বিস্তারে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অবস্থানে রয়েছে।

ড. ইউনূসের মন্তব্য ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। কারণ ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি সমুদ্রপথে বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল। দিল্লি এখন এই নির্ভরতা কমাতে বিকল্প পথ খুঁজছে।

ভারতীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রতি মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। যার ব্যয় আনুমানিক ২২,৮৬৪ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটি সম্পন্ন করার সময়সীমা ২০৩০ সাল নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভারতের জাতীয় মহাসড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ড. ইউনূসের মন্তব্যই এই প্রকল্পের মূল কারণ। উদ্দেশ্য এক এবং একই – বাংলাদেশকে এড়িয়ে কলকাতা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি করা।

এই মহাসড়কটি ভারতকে মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মণিপুরের সাথে সংযুক্ত করবে। এরপর এটি ভারত-মিয়ানমার যৌথ প্রকল্প, কালাদান করিডোরের সাথে সড়কপথে সংযুক্ত হবে। যা মায়ানমারের সিত্তে নদী বন্দর, পালেতোয়া এবং জেরিনপুর হয়ে কলকাতা বন্দরের সাথে সংযুক্ত হবে।

এই সড়ক নির্মাণে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ—পাহাড়, পাথর, ভূমি অধিগ্রহণসহ পরিবেশগত নানা প্রতিবন্ধকতা। তবুও ভারত সরকার আশা করছে, একদিন এই মহাসড়ক হয়ে কলকাতা থেকে পণ্য যাবে মিয়ানমার ঘুরে সরাসরি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে—বাংলাদেশকে পুরোপুরি বাইপাস করে।

একদিকে, ভারত বাংলাদেশের উপর তার নির্ভরতা কমাতে চায়, অন্যদিকে, অন্যদিকে মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নির্ভরশীল হচ্ছে। এই কৌশলটি শেষ পর্যন্ত কতটা টেকসই হবে তা দেখার বিষয়।

Scroll to Top