বাংলাদেশকে নিয়ে মোদির ষড়যন্ত্র ফাঁস, ইন্ডিয়া ডট কমের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত এক অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের মঞ্চে পরিণত হয়েছে। মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম ঘেঁষা এলাকাগুলোতে গোপনে প্রবেশ করানো হচ্ছে শত শত মানুষ—যাদের মধ্যে অধিকাংশই সন্দেহভাজন ভারতীয় নাগরিক। ভারত সরকার এটিকে “অবৈধ অভিবাসন নির্বাসন” বলে অভিহিত করে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, অভিবাসীদের কখনও গোপনে নদীতে ফেলে দেওয়া হয় না বা বনে ঠেলে দেওয়া হয় না। এর ফলে সীমান্তে থাকা বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে সামনে এলো এক বিস্ফোরক তথ্য। একটি প্রতিবেদনে, প্রভাবশালী ভারতীয় মিডিয়া হাউস India.com পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে “বেলুচিস্তানের মতো পৃথক করা যেতে পারে।” এই দাবি কেবল বিভ্রান্তিকরই নয়, এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে চট্টগ্রামকে আলাদা করার জন্য ভারতীয় কূটনৈতিক এবং মিডিয়া মহলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে।

India.com আরও দাবি করেছে যে চট্টগ্রামে ‘বিদেশীরা বাস করছে’, যার অর্থ তারা বাংলাদেশি বাঙালিদের ‘বিদেশী’ বলছে – এক ধরণের মানসিক আগ্রাসন। এই প্রোপাগান্ডা স্পষ্টতই একটি ইনফরমেশন ওয়ারফেয়ার—যেখানে মিডিয়াকে ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশে বিভ্রান্তি, ভীতি ও জনমনে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW এবং সরকারপন্থী মিডিয়া এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে যেখানে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে একটি ‘অস্থিতিশীল রাষ্ট্র’ হিসেবে চিত্রিত করা হবে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে নতুন করে ‘নামহীন’, ‘পরিচয়হীন’ ব্যক্তিদের পাঠানো হচ্ছে, যারা সম্ভবত নতুন করে সন্ত্রাস বা বিচ্ছিন্নতাবাদ উসকে দিতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন যে ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকার এখন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ভূ-রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের দিকে কাজ করছে। তারা বাংলাদেশকে, বিশেষ করে চট্টগ্রামকে একটি ‘ভূ-কৌশলগত সংযোগ’ হিসেবে বিবেচনা করে যা চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক রোধ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। অতএব, যদি অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায়, তাহলে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক মনোযোগ অভ্যন্তরীণভাবে কেন্দ্রীভূত হবে, যার ফলে বহিরাগত জোট গঠনের সুযোগ কমে যাবে।

সরকার ইতিমধ্যে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে। তবে, কেবল সামরিক প্রতিরক্ষা নয়, কৌশলগত মিডিয়া প্রতিরক্ষাও গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারতের তথ্য যুদ্ধ মোকাবেলায় মোকাবেলায় বাংলাদেশের উচিত একটি শক্তিশালী, তথ্যভিত্তিক, বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক প্রচারণা চালানো। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক জোটগুলোতে এই বিষয়টি তুলতে হবে।

India.com-এর প্রতিবেদন কেবল সাংবাদিকতা নয়, এটি একটি নতুন ধরণের ‘স্বীকারোক্তি’। মোদী সরকারের বাংলাদেশ-বিরোধী কৌশল আর পরোক্ষ নয়, বরং প্রত্যক্ষ এবং চ্যালেঞ্জিং। বাংলাদেশ যদি এখনই সতর্ক না হয়, তাহলে আগামী দিনে চট্টগ্রাম কেবল একটি ভৌগোলিক সংকট নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।

Scroll to Top