সচিবালয়ের ভেতরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমার হেঁটে বেড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন ও সমালোচনা। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল থেকে সচিবালয়ের একটি ভবনের নিচে ধারণ করা সেই ভিডিও ঘিরে দেখা দেয় নানা ধরনের আলোচনা।
অনেকেই দাবি করেন, উমামা তদবির বা ব্যক্তিস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো কারণে সেখানে গিয়েছিলেন। তবে এসব অভিযোগের জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। প্রথমে একটি ফেসবুক পোস্ট এবং পরে একটি ফেসবুক লাইভে এসে পুরো বিষয়টিকে ‘ভিত্তিহীন গুজব’ আখ্যা দেন উমামা।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে উমামা লেখেন,গুজববাহিনীর গুজবের ঝুড়ি খুলছে। জুলাই অভ্যুত্থানের হোমসা করে পকেটে ভরার পর আমারেও নিজেদের পর্যায়ে নামাইতে চায়। এদের মতো খাই খাই স্বভাব হলে এতদিনে মাথায় তুলে রাখত। খাই খাই পলিটিক্স করতে না পারলে নোংরামি করে টেনে নামানোর চেষ্টা করে যাবে। আমি প্রচন্ড আত্মসম্মান ধরে রেখে প্রতিটা পদে পদে পা ফেলি। ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত জীবনটাকে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে চলার চেষ্টা করছি। আমি বলি, তোমরা মামা কইরা যাও। আমিও আছি, আমার যথেষ্ট ক্যাপাসিটি আছে নিজ চেষ্টায় আগায় যাওয়ার। মাইনষের ফাইলের দালালি কইরা আমার জীবন চালানোর দরকার নাই। তোমরা ফাইযলামি কইরা যাও! আমিও এখানেই দাঁড়ায় আছি! ফাযিলের দল।
পরে দেওয়া ফেসবুক লাইভে তিনি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা দেন। জানান, সচিবালয়ে ওই সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা এক তরুণী জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। পরবর্তীতে ওই তরুণীসহ শহীদ নুর মোস্তফার স্বীকৃতি সংক্রান্ত স্মারকলিপি নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে জানান।
লাইভে ওই তরুণী জানান, “আমরা শহীদ নুর মোস্তফার স্বীকৃতি দাবি করে যে স্মারকলিপি দিয়েছি, তার আপডেট জানার জন্য সচিবালয়ে এসেছিলাম।”
এ কথা নিশ্চিত করে উমামা বলেন, “হঠাৎ শুনি, আমরা নাকি তদবির করতে গিয়েছি! ঠিক আছে, তাহলে শুনে রাখুন—আমরা তদবির করেছি শহীদ পরিবারগুলোর সম্মানজনক পুনর্বাসনের জন্য। যেন শুধু অর্থ নয়, বরং তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সম্মানজনক চাকরির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ যেন শুধুই স্মৃতিচারণে সীমাবদ্ধ না থাকে—রাষ্ট্র যেন দায়িত্ব নিয়ে তাঁদের পরিবারের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সেটাই আমাদের মূল দাবি।”