ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহাসচিব নুরুল ইসলাম সাদ্দাম দাবি করেছেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুকে করা মন্তব্য শপথ ভঙ্গ করেছে।
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সংবিধানবিরোধী যে কাজটি করেছেন তাতে তিনি শপথের ভায়োলেশন করেছেন। কোনো রাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কাউকে হুমকি দেওয়া বা কোনো বিষয়ে তার দায়িত্ব থাকাকালীন সময় এটা তার জন্য মানায় না।’
সোমবার (১২ মে) বিকেলে রংপুর কারমাইকেল কলেজে ‘মেধাবীদের মাকাস ছাত্রশিবির’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
শিবির সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পরপরই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অযাচিত যে বিতর্কের উদ্রেক করা হয়েছে এতে মনে হচ্ছে যে তিনি কোনো ইনটেনশনের (উদ্দেশ্য) জায়গা থেকে এ কাজটি করেছেন। এই ক্ষেত্রে, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগদান করে এটি করতে পারতেন। আমরা আশা করি তিনি কেন এটি করেছিলেন তা দ্রুত ব্যাখ্যা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়ে ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এখানে যে অযাচিত বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি তার দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে এই বক্তব্য আশা করি না।’ শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা আশা করেন যে মাহফুজ আলম তার বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন।
নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘ইসলামী ছাত্র শিবির ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
তাই মুক্তিযুদ্ধ বা রাজাকারদের বিষয়ে তিনি যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন তা কোনওভাবেই ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পর্কিত নয়। এই দোষারোপের খেলা আগেও খেলা হয়েছে। এটা করে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে করে বাংলাদেশে ফ্যাসিজম কায়েম করেছে। আবার যারা এই রাস্তা অবলম্বন করতে চায় নিঃসন্দেহে দেশের জনগণ এটাকে ভালোভাবে নেবে না। দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর একটি ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
উপদেষ্টা পরিষদে মাহফুজসহ যারা আছেন তাদের সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জুলাই আন্দোলন করেছি।’
শিবির সম্পাদক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত দলটিকে নিষিদ্ধ করার আন্দোলনেও ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থন দিয়েছে এবং উপস্থিত ছিল। এর আগে নিরাপদ সড়ক ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রশিবির অংশগ্রহণ করেছে এবং সহযোগিতা করেছে।’
শিবির এনসিপির কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি যখন যাত্রা শুরু করে তখন তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে কোনো লোক পাঠানো হয়নি। তারা যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফরমে ছিল তারা বলেছেন যে এটি কোনো রাজনৈতিক সংগঠন না এবং তাদের রাজনীতি করার ইচ্ছে আগ্রহ নেই। জুলাই আন্দোলনে তখন শিবিরসহ সব রাজনৈতিক দলগুলো গেছে কারণ এটা ছিল একটি কমন প্ল্যাটফরম। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে হাসনাত আব্দুল্লাহ এ দেশের মানুষকে ডেকেছিল। এ জন্য সে আন্দোলনে ছাত্রশিবির অংশগ্রহণ করেছে।’
কুরআন দিবস উপলক্ষে কারমাইকেল কলেজ শাখা ‘প্রতিভার মুখোমুখি ছাত্রশিবির’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক হাফেজ মেজবাহুল করিম, মহানগর সভাপতি নূরুল হুদা, সম্পাদক আনিসুর রহমান, জেলা সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ প্রমুখ।