ফ্যাসিস্টদের দোসর এখন বিএনপিতে, ১৬ বছরের যন্ত্রণা ভুলে যাবে নেতাকর্মীরা?

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও হয়রানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত, আওয়ামী আমলে সুবিধাভোগী ও দলটির নেতাদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকা বেশ কয়েকজন ধূর্ত ব্যক্তি এখন বিএনপির ‘নব্যনেতা’ হওয়ার চেষ্টা করছেন। এদের মধ্যে অন্যতম সুন্দলপুর ইউনিয়নের দশপাড়া গ্রামের খন্দকার আবুল খায়ের। তিনি দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী (বর্তমানে পলাতক) সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপিপুত্র মোহাম্মদ আলী সুমনের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন। বর্তমানে তার একটি ভিডিও ক্লিপ ও স্থিরচিত্র ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে পরিচিত আবুল খায়েরসহ আরও কয়েকজন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে দাউদকান্দি বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। দাউদকান্দিতে গত ১৬ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি, অথচ আওয়ামী নেতাদের চাটুকারিতা করা ফ্যাসিস্টদের দোসররা এখন বিএনপির পতাকা তলে আশ্রয় খুঁজছে। খন্দকার আবুল খায়েরসহ আরও অনেকেই আছেন যারা আওয়ামী আমলে ড. মোশাররফ স্যারের বিরোধিতা করেছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। এখন শেখ হাসিনার পতনের পর তারা বিএনপিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এসব সুবিধাবাদী চাটুকার গত ১৬ বছর ধরে আমাদের হামলা, মামলা ও হয়রানিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদত দিয়েছে, এমনকি আমাকে হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করেছে। আল্লাহ্‌র কৃপায় আমি প্রাণে বেঁচে গেছি। দলীয় স্বার্থে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে যাতে এসব আওয়ামী দোসর বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। তারা ঢুকলে স্থানীয় রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টি হবে।”

এ বিষয়ে সুন্দলপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেন, “দশপাড়ার আওয়ামী দোসর খন্দকার আবুল খায়েরের গডফাদাররা যখন পলাতক, তখন সে এবং আরও কয়েকজন আওয়ামী ঘরানার লোক বিএনপিতে ঢুকতে চাইছে। আমি বিষয়টি প্রতিহত করতে দাউদকান্দি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী সুমনের সঙ্গে তার ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে পোস্ট করি। পরে এটি ভাইরাল হয়। এই আবুল খায়েরের মদতেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমার নামে তিনটি মামলা দিয়েছে, আমাকে এলাকায় আসতে দিত না। তার বাড়ির আঙিনায় ছিল আওয়ামী লীগের অফিস, জয়বাংলা স্লোগান দিতো, ড. মোশাররফ স্যারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, ঢাকা শহরে চাকরি করলেও এলাকায় এসে বিএনপি কর্মীদের শাসাতো, আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতো। এখন সেই লোক বিএনপি নেতাদের আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, জিয়া পরিষদের অফিস বসানোর সুযোগ খুঁজছে। আমি একজন সাধারণ বিএনপি কর্মী হিসেবে দলের হাইকমান্ডের কাছে অনুরোধ করছি—১৬ বছর আমাদের ওপর আওয়ামী স্টিমরোলার চালানো সুবিধাবাদী খন্দকার আবুল খায়েরদের যেন বিএনপিতে ঢুকতে না দেওয়া হয়।”

Scroll to Top