‘ছাত্র-উপদেষ্টা স্যারেরা, হামিদকে ছেড়ে দেওয়ার দায়ে আপনারা তিন দিনের মধ্যে পদত্যাগ করুন। — ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদি বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সাজীব ভূঁইয়াকে ইঙ্গিত করেই এই বক্তব্য দিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র।
শরীফ উসমান হাদি তার পোস্টে আরও বলেন, “এরপর আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাব। হয় গণহত্যার বিচার হবে, ফ্যাসিস্ট লীগ নিষিদ্ধ হবে — নয়তো অন্তর্বর্তী সরকার যাবে। এই দায় এড়াতে তোমাদের সময় দিয়েছি। সুযোগ নিয়ে যদি আমাদের কাতারে আসো, সম্মান পাবে।আর যদি চেয়ার ছেড়ে দিতে কান্না পায়, তাইলে এরপর থেকে আপনাদেরকে ‘তুই’ বলা শুরু হবে! সঙ্গে বঙ্গীয় গাইল।
এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তজনুভা জাবিনও মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সাজীব ভূঁইয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
পোস্টে তাজনূভা লিখেন, এনসিপির কেউ না, জুলাইয়ের আগের সাধারণ জনগণের কাতারের তাজনূভা হয়ে বলছি, মাহফুজ আর আসিফের সরকার থেকে সরে আসা উচিত। সরে এসে আবার রাজপথে জনগণের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
তিনি আরও লিখেন, “তারা এখন আর সেখানে গ্রহণযোগ্য নয়। যে সরকারে তারা আছেন, সেটা আর কোনো বিপ্লবী সরকার নয়। তাদের আর সেখানে গ্রহণ করা যাচ্ছে না। পদত্যাগ করে জনগণকে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারা জুলাইয়ের শহিদদের কাছে দায়বদ্ধ।”
তিনি আরও লেখেন, আমিই এত মর্মাহত, শহিদ, আহতদের কেমন লাগছে। তাদের চোখের সামনে আসামিরা দাপটের সঙ্গে মাথা উঁচু করে পালাচ্ছে।
পোস্টের শেষাংশে তাসনূভা জাবীন বলেন, আমার মনে হয়, আমাদেরকে আবার রাজপথে এক হতে হবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে। কারণ জুলাই শেষ হয় নাই, আদতে জুলাই এখনও চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়। এরপর থেকেই দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান। অনেকেই দেশ ছাড়লেও সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এতদিন দেশে অবস্থান করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনিও দেশ ত্যাগ করেছেন।
জানা গেছে, ছাত্র বিক্ষোভের ৯ মাস পর বুধবার (৮ মে) দিবাগত রাত ৩:০৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ ফ্লাইটে করে তিনি থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে রিয়াদ আহমেদ এবং শ্যালক ড. এ এম নওশাদ।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে আবদুল হামিদ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করে দেশত্যাগের অনুমতি পান তিনি। তার বিরুদ্ধে কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল না।
আওয়ামী লীগের আমলে আবদুল হামিদ ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দুই দফায় রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন তিনি।