বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দলের বাতিল হওয়া নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের আপিলের দ্রুত শুনানির আবেদন করা হয়েছে। দলটির আইনজীবী রবিবার (৪ মে) সকালে আপিল বিভাগে এই আবেদন দাখিল করেন।
আপিলে বলা হয়েছে, জামায়াতের আপিলের শুনানি শুরু হলেও তা হঠাৎ করে মুলতবি করা হয়। যেহেতু দলটির নিবন্ধন ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এ মামলার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, তাই এর দ্রুত শুনানি প্রয়োজন।
শুনানির পর আপিল বিভাগ জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার বা বুধবার এই বিষয়ে আদালতে বিষয়টি উপস্থাপন করা হতে পারে।
এর আগে, চলতি বছরের ১২ মার্চ জামায়াতের নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের আপিল শুনানি শুরু হয়।
গত বছরের ২২ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ জামায়াতের নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের বাতিল হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করেন। এর ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ের পথ খুলে যায়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রিফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জামায়াতের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শীষির মুনির। রিট আবেদনের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আলী আজম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য , ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রিট পিটিশনের নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
জামায়াত ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির দিন জামায়াতের প্রধান আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায়, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ‘ডিফল্টে খারিজ’ হিসেবে আপিলটি খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে এবং নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকে।
এদিকে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, ২০২৪ সালের ১ আগস্ট সরকার জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর ১৮(১) ধারা অনুযায়ী দল ও সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে পরে, একই বছরের ২৮ আগস্ট সরকার সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে।