অভিনব কৌশলে প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাত করলেন ব্যাংক কর্মকর্তা আফসানা

রেমিট্যান্স জালিয়াতির মামলায় আফসানা শাহিন মুন্নি (৩৬) নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে খুলনা আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আফসানা শাহিন মুন্নি সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক খুলনা শাখার প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি মহানগরীর ইস্পাহানি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল আল হাদিস বাট্রি নামক এক মালয়েশিয়াপ্রবাসীর অ্যাকাউন্টে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তার স্ত্রী বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আফসানা শাহিন মুন্নীসহ ৮-৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ওসি হাওলাদার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন মাসুম জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোল্লা জুয়েল রানার নেতৃত্বে একটি দল ঢাকা থেকে মুন্নিকে গ্রেপ্তার করে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

মামলার বিবরণী অনুসারে, বাদীর স্বামী আল হাদিস বাত্রী মালয়েশিয়ায় থাকেন। বিদেশ থেকে তিনি ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে খুলনা মহানগরীর আপার যশোর রোডে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক খুলনা শাখায় নিজের নামে অনলাইনে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন।

পরে ওই অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় মোট ১০ লাখ ২ হাজার টাকা জমা করা হয়। তাঁর স্বামী চলতি বছরের ১৮ মার্চ দেশে ফিরে অর্থ উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাঁর অ্যাকাউন্টে মাত্র ৩ লাখ ২ হাজার টাকা রয়েছে এবং বাকি ৭ লাখ টাকা নেই বলে জানান।

তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট বের করে দেখতে পান যে গত বছরের ২৫শে ফেব্রুয়ারি ব্র্যাক ব্যাংকের একজন অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টে আরটিজিএসের মাধ্যমে তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৭ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তর করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টের দাতা বা অ্যাকাউন্টধারীকে উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু সেই সময় তার স্বামী বিদেশে অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে, আসামিরা ভুয়া লোক পরিচয় দিয়ে এবং নথি জাল করে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য একে অপরের সাথে ষড়যন্ত্র করে। বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনও সমাধান দেয়নি।

সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের খুলনা শাখার ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমেদ বলেন, তিনি নতুন যোগদান করায় বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখছেন।

Scroll to Top