আমরা যেন আরেকটা গাজা না হই, রাখাইন করিডর নিয়ে সব দলের মতামত নেওয়া উচিত ছিল: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের জাতিসংঘের প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আগে সরকারের সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করা উচিত ছিল।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা আরেকটি গাজা হতে চাই না… আমরা আরেকটি যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমাদের দেশে আর কেউ এসে যেন নতুন কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই বিপদে রয়েছি। তাই আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনার দরকার ছিল।”

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত। ফখরুলের এই মন্তব্য আসে একদিন পর, যখন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের জাতিসংঘের প্রস্তাবে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে, তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে।

তিনি বলেন, “জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ নীতিগতভাবে একটি মানবিক করিডোর অনুমোদন করেছে। এটি শুধুমাত্র মানবিক সহায়তার জন্য ব্যবহার করা হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। আমরা বিস্তারিত বলতে পারছি না। শর্ত পূরণ হলে আমরা সাহায্য করব।” মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “যেহেতু সরাসরি রাখাইনে প্রবেশ করা সম্ভব নয়, তাই এখন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চল দিয়ে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব। সসরকার এখন একটি মানবিক করিডোর দিচ্ছে।”

তিনি গাজার কথা উল্লেখ করে বলেন, “গাজায় কি যুদ্ধ চলছে না? ইসরাইল ক্রমাগত গাজায় বোমাবর্ষণ করছে। কেউ সেখানে যেতে পারছে না। জাতিসংঘ খাদ্য ও ওষুধ পাঠানোর জন্য জর্ডান বা মিশরের মধ্য দিয়ে রুট তৈরি করছে। মানবিক কারণে এটি প্রয়োজনীয়। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশ কেন এমন একটি পর্যায়ে গেল যেখানে এখন মানবিক করিডোর দিতে হচ্ছে? এটি একটি বড় সিদ্ধান্ত।”

ফখরুল বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনমত এবং রাজনৈতিক দলগুলির অংশগ্রহণ অপরিহার্য ছিল। “মানুষকে সাহায্য করতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। জাতিসংঘের উদ্যোগেও কোনও আপত্তি নেই। তবে এটি সকলের মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে,” । নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পূর্ববর্তী শাসনামলে দুর্নীতির সুযোগ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা রাজকীয় হয়ে উঠেছিল। সেজন্যই আমরা ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু একই সাথে আমরা নির্বাচনেরও দাবি করছি। আমরা আশা করি সরকার সদিচ্ছা দেখাবে। “তারা বলছে যে তারা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে চায়। আমরা বলি – অস্পষ্ট বক্তব্য না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দিন। একটি রোডম্যাপ দিন।

Scroll to Top