ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযান: পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই ভারতে হাজারো বাংলাদেশিকে আটক

ভারতের গুজরাট রাজ্যের দুটি শহর আহমেদাবাদ এবং সুরাটে পরিচালিত এক বড় অভিযানে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১,০০০-এরও বেশি অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কঠোর নির্দেশের পর এই অভিযান চালানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দেশের সকল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে কথা বলেছেন অমিত শাহ।

তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে রাজ্যে কোনও পাকিস্তানি নাগরিক অবস্থান করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। যদি কেউ থেকে থাকে, তবে তাকে শনাক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানো উচিত। এই নির্দেশের পর, গুজরাটে একটি বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই তথ্য জানিয়েছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

প্রতিবেদন অনুসারে, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভির নির্দেশে অভিযান শুরু করা হয়েছে এবং এটি একটি ঐতিহাসিক সাফল্য। আহমেদাবাদ শহর থেকে প্রায় ৮৯০ জন এবং সুরাট থেকে ১৩৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা এবং শিশু রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংভি বলেন, গুজরাট পুলিশের ইতিহাসে এই অভিযান সবচেয়ে বড়। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই মাদক পাচার, মানব পাচার এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে জড়িত। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া চার বাংলাদেশির মধ্যে দুজন আল কায়েদার স্লিপার সেলের সদস্য।

তিনি আরও বলেন যে, এই অভিবাসীরা মূলত পশ্চিমবঙ্গ থেকে জাল পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রবেশ করেছিল এবং পরে গুজরাটে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিল। তিনি এই জাল নথি প্রস্তুতকারী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন।

সুরাট শহরে অভিযানে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০টি পুলিশ দল অংশ নিয়েছিল। অভিযানটি গভীর রাতে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলে। আটককৃতদের সুরাট পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাদের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

সুরাট পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রাঘবেন্দ্র ভাট বলেন, বিভিন্ন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে পরিচালিত এই অভিযানে আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং তাদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, শীঘ্রই তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

এই অভিযানে, গুজরাট সরকার একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে – যারা দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের রেহাই দেওয়া হবে না, এবং যারা তাদের আশ্রয় দেবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

Scroll to Top