হাসিনা ৫ আগস্ট পালিয়ে যান। পালানোর প্রায় এক বছর পর, হাসিনার নেতাকর্মীরা এখন তাণ্ডব চালাতে চাইছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংবাদমাধ্যম আওয়ামী লীগের উগ্র মানসিকতার খবর প্রকাশ করেছে। মে-জুন মাস নাগাদ ঢাকা দখলে নিতে চায় দলটি। এরই প্রস্তুতি হিসেবে বিদেশে পলাতকদের মধ্য থেকে এক হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় ঢুকবে। তারাই মূলত ঢাকা দখলের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিবে।
এছাড়া, যারা পালাতে পারেনি এবং দেশে আটকা পড়েছে, তারা রাজধানীর বস্তিগুলোকে লক্ষ্য করেছে। এসব বস্তিতে নানা পেশার আড়ালে ছদ্মবেশে বসবাস করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ছদ্মবেশে থাকা এসব নেতাকর্মীরা বস্তিয়ে বসবাস করেই ঢাকা দখলের টার্গেট করে দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে চায়।
সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বস্তিতে আশ্রয় নেওয়া নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যেই এলাকাগুলো টার্গেট করে রেখেছে এবং সামনে আরও নৈরাজ্য চালানোর পরিকল্পনা করছে। ইতিমধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংক্ষিপ্ত মিছিল করেছে দলটি। নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য এসব মিছিলের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছে। যদিও এসব মিছিলে খুব বেশি লোকজন দেখা যায় না। শুধুমাত্র ভিডিও নেয়ার জন্য যতটুকু সময় মিছিল করা দরকার ততটুকুই করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বিদেশে পলাতক নেতাকর্মীরা দেশে ছদ্মবেশে থাকা নেতাকর্মীদের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছে। যদিও অর্থ পাঠানোর বিষয়টি নতুন নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছিনতাইকারী বলেন, যখন ছিনতাই বেড়ে গেল তখন তাদেরকে কিছু আওয়ামী লীগের নেতা টাকা দিয়ে চুরি-ছিনতাই করতে বলেন। তারাও অভাবের তারণায় সেই টাকা নিয়ে চুরি-ছিনতাই করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢাকা দখলের টার্গেটে সহায়তা করছে প্রতিবেশী ভারতের বিজেপি সরকার, গোয়েন্দা সংস্থা ও গোদি মিডিয়া।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকার বস্তিগুলোতে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে, ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চললেও ভারত সরকার নীরব রয়েছে। পাশাপাশি, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকাসহ সারা দেশে নাশকতায় জড়িত রয়েছে।
ছদ্মবেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় তারা ধারাবাহিকভাবে নাশকতা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ ‘ধানমণ্ডি ৩২’-এর ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ভরদ্বাজ মুখার্জি দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। উক্ত ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রুপের আলোচনায় বিজেপি নেতা কোনো রাখঢাক না করেই আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন। বৈঠকের স্ক্রিনশট এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ শাখার বিজেপি ও আরএসএস। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য একটি সরাসরি হুমকি।
ঢাকার করাইল বস্তি, সাত তলা বস্তি, লালবাগ, মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, ভাসানটেক, ক্ষিলক্ষেত বস্তি, খিলগাঁও তালতলা সহ বেশ কিছু বস্তি ও আশেপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে অবস্থান করছে। আগে বস্তিতে কিছু ঘর ফাঁকা থাকলেও ৫ই আগস্টের পর ঘরগুলো এখন আর ফাঁকা থাকে না। বেশিরভাগ ঘরেই ব্যাচেলর আবার কেউ পরিবার নিয়ে নতুন নতুন মানুষ বস্তিতে বাসা ভাড়া করছেন। নতুন এসব বাসিন্দাদের দেখতে কিছুতেই বস্তিবাসী মনে হয় না।