দেশের মাটিতে মিললো বিরল খনিজ, চীন বিমুখ যুক্তরাষ্ট্র ইউনূসের দরজায় আসবে?

চীন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের চীনা পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি চীন বিরল খনিজ পদার্থ ও চৌম্বকীয় উপাদান রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ১৩ই এপ্রিল নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা জারি করেছে। এর ফলে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলসহ অন্যান্য প্রযুক্তি-নির্ভর কোম্পানি চরম বিপাকে পড়েছে, কারণ আইফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য এসব বিরল খনিজ পদার্থ অত্যন্ত জরুরি, যা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানি করে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র বিকল্প বাজার খুঁজছে। এদিকে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (GSB) দেশের ভেতরে বিরল খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছে। সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার পার্বত্য এলাকার পলিমাটিতে তেজস্ক্রিয় ও বিরল খনিজ পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। এসব খনিজ পদার্থ নদী অববাহিকার বালি, চর, সমুদ্রসৈকতের বালি এবং কয়লাখনিতেও পাওয়া গেছে।

এই আবিষ্কার ইতিমধ্যেই দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে সাড়া ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই খনিজ পদার্থগুলো সংগ্রহের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাও রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি ‘এভারলাস্ট মিনারেলস’ ইতিমধ্যেই গাইবান্ধা জেলার যমুনা নদীর প্রায় ২,৩৯৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে বালু থেকে ভারী খনিজ সংগ্রহ শুরু করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি শিল্প ও প্রতিরক্ষা খাতে এই খনিজ পদার্থগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুযায়ী, চীনের বিরল খনিজের সবচেয়ে বড় মজুদ রয়েছে—প্রায় ৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এরপর রয়েছে ব্রাজিল (২১ মিলিয়ন টন) এবং ভারত। তবে বাংলাদেশ যদি এই খনিজ পদার্থগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে বৈশ্বিক বাজারে দেশের গুরুত্ব হঠাৎ করেই বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে এমনকি একটি শক্তিশালী দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্রকেও বাংলাদেশের দরজায় দেখা যেতে পারে—বিশেষ করে এই খাতে যুক্ত প্রতিষ্ঠান UNES-এর দরজায়।

এই আবিষ্কার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নয়, ভূরাজনীতিতেও দেশের অবস্থানকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারে।

Scroll to Top