শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ভাতিজি টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যারা একটি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফারিদ।

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার (তদন্ত) বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছি। দুদক তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।”

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাফিজ আহসান ফারিদ বলেন, “আমরা এখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথিপত্র পাঠিয়েছি। যেটা মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) নামে পরিচিত। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশি দূতাবাসে যাবে। সেখান থেকে তা বাংলাদেশের দূতাবাসে যাবে। আমরা সেই কাজ শুরু করেছি। দুদক তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।”

টিউলিপ সিদ্দিককে ফিরিয়ে আনার আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, “কীভাবে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে সেই আইনি প্রক্রিয়া আমি বলতে পারছি না। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে মামলা হয়েছে। তাকে পাঠানো চিঠি তার বাংলাদেশের ঠিকানায়ই পাঠানো হয়েছে। আমরা তাকে বিদেশি নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করছি না। মামলা দায়েরের সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, “রেড নোটিশ সম্পর্কে আমার জানা নেই। বিষয়টি এখনও কমিশনে আলোচনা হয়নি।”

কবে আলোচনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পরবর্তী কমিশন মিটিংয়ে হবে। এই সপ্তাহে না হলে, আগামী সপ্তাহে হবে।”

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—জানতে চাইলে দুদক কমিশনার বলেন, “এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার (ভারতকে) জানিয়েছে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফিরিয়ে দিতে। আমাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে আমরা তাদের সহায়তা পাবো।”

রাজউকের একটি আবাসন প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার প্লট দুর্নীতির মাধ্যমে লাভ ও ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুদক।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক মামলা করা হয়েছে।

Scroll to Top