না ফেরার দেশে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি গোলরক্ষক

আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের কিংবদন্তি সাবেক গোলরক্ষক হুগো ওরল্যান্ডো গাত্তি আর নেই। স্থানীয় সময় রবিবার (২০ এপ্রিল) ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল) খবরটি নিশ্চিত করেছে।

গত দুই মাস ধরে গাত্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রথমে কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয়েছিল, পরে নিউমোনিয়া, কিডনি ও হৃদযন্ত্রের জটিলতা দেখা দেয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শেষ পর্যন্ত তার পরিবার তাকে লাইফ সাপোর্ট থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গাত্তির ডাকনাম ছিল ‘এল লোকো’, যার অর্থ ‘পাগল’। তার অস্বাভাবিক ও ভিন্নধর্মী গোলরক্ষক কৌশলের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগে সর্বোচ্চ ৭৬৫টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড তার দখলে। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৬ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে খেলেছেন তিনি। এই সময়ে তিনি ১৯৭৭ সালে বোকা জুনিয়র্সের হয়ে কোপা লিবার্তাদোরেস জয় করেন।

গোলপোস্ট ছেড়ে রক্ষণের ভূমিকায় আসা — আধুনিক ফুটবলে যেটিকে আজ “সুইপার কিপার” বলা হয় — এই ধারা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে প্রথম চালু করেন গাত্তিই। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা যখন ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে, তখন গাত্তিরই মূল গোলরক্ষক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাঁটুর চোটের কারণে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই দল থেকে ছিটকে পড়েন তিনি।

গাত্তি শুধু একজন খেলোয়াড় ছিলেন না — তিনি ছিলেন স্পষ্টভাষী, এক যুগের প্রতীক। তিনি প্রায়ই বিতর্ক তৈরি করতেন। একবার দিয়েগো ম্যারাডোনাকে ‘গর্ডিতো’ বা ‘মোটা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন, যার প্রতিশোধে পরের ম্যাচে ম্যারাডোনা তার বিপক্ষে চার গোল করেন।

তার প্রয়াণে বিশ্ব ফুটবল হারাল এক সাহসী ও বৈচিত্র্যময় কিংবদন্তিকে।

Scroll to Top