নিরবিচারে টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে। গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই একে একে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন, কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবির মধ্যেই কারাবন্দি সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় জুট ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করে এজলাস সংলগ্ন হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানির আগে তাকে এজলাসে তোলা হয়। সে সময় নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, “অবশ্যই নির্বাচন করব।” তিনি আরও বলেন, “রাজাকাররা ক্ষমতায়, মুক্তিযোদ্ধারা জেলখানায়।”
শুনানি শেষে তাকে হাজতখানা নিয়ে যাওয়ার পথে শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তোমরা কিছু বলো না। শুধু আমাকে দিয়ে বলাতে চাও।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘রাজাকাররা ক্ষমতায়, মুক্তিযোদ্ধারা জেলখানায়।
এদিকে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুই পুলিশ সদস্যকে হুমকি দেন শাজাহান খান—এমন অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি সত্য বলেছি। যা ঘটেছে, তাই বলেছি।” তিনি আরও দাবি করেন, তাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়, গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানাধীন চানখারপুল এলাকায় ছাত্র ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আন্দোলনের সময় আসামিদের ছোড়া গুলিতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত মনিরের স্ত্রী চলতি বছরের ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ নিজ বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করে। এরপর একাধিক মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।