বাংলাদেশে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধ, স্থলপথে বড়সড় নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে

ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা এবং বুড়িমারীসহ পাঁচটি স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে সমুদ্রপথ বা বিকল্প অন্য পথে সুতা আমদানির ওপর কোনো বাধা থাকছে না।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ-সংক্রান্ত একটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়। এই নির্দেশনার মাধ্যমে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা আগের প্রজ্ঞাপনটি সংশোধন করা হলো।

উল্লেখ্য, এসব স্থলবন্দর হয়ে মূলত ভারত থেকেই সুতা আমদানি করা হতো, যা দেশীয় টেক্সটাইল খাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় প্রভাব ফেলছিল।

এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায়। তাদের মতে, এতে স্থানীয় সুতা শিল্প মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

মার্চ মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এনবিআরকে একটি চিঠিতে সুপারিশ করে, যাতে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়ানো যায়। তারা সীমান্তবর্তী সড়ক ও রেলপথ দিয়ে সুতা আমদানির আগে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কাউন্ট নির্ণয়ের পর্যাপ্ত অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। ফলে এনবিআর নতুন আদেশ জারি করে এই পথে আমদানি বন্ধ করে দেয়।

তথ্য অনুযায়ী, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের সুতার দামের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, ভারত থেকে স্থলপথে আমদানি করা সুতার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এতে দেশীয় উৎপাদকরা বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন।

ভারতের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় সংরক্ষণ করে সেখান থেকে কম দামে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। ফলে স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্পে দেশে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে ভারতীয় সুতা ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, যা স্থানীয় শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ বিটিএমএ’র।

এই অবস্থার প্রেক্ষিতে এনবিআরের পক্ষ থেকে স্থলপথে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যাতে দেশের টেক্সটাইল শিল্প পুনরায় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে ফিরতে পারে।

Scroll to Top