আ.লীগ নেতার সাথে এক হয়ে বিএনপির ৬ নেতাকে বেদম ভাবে প্রহর করলেন জামায়েত নেতারা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মন্ডলেরহাটে আওয়ামী লীগ নেতার ভাই বাবু ও ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে দোকানে হামলা ও দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শফিকুলসহ বিএনপি ও যুবদলের ছয় নেতা আহত হয়েছেন।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চাপড়হাটি ইউনিয়নের মন্ডলেরহাটে এ ঘটনা ঘটে।আহতদের মধ্যে চাপড়াহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া মির্জা নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ ছাপড়রহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজমুল মাস্টার, তার ভাই একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও বাঁধনসহ তিনজনকে আটক করেছে। তবে আগেই পালিয়ে গেছে অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বাবু ও ছাপড়রহাটি ইউনিয়নের এক কথিত জামায়াত নেতা শহিদুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, চাপারহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও ছাত্রনেতা শফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় ইউনিয়নের প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা বাবুর ওষুধের দোকানের সামনে রাখা একটি বেঞ্চে ধাক্কা মারেন। এ সময় উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এ সময় বাবুর ভাই আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল মাস্টার ও মঞ্জুরুল ইসলাম এবং জামায়াত নেতা শহিদুল ও তাদের লোকজন শফিকুলের উপর হামলা করে তাকে মারধর করে। পরে শফিকুল জীবন বাঁচাতে কাছেই আলমের দোকানে আশ্রয় নেন। কিন্তু তারা সেখানেও তাকে আক্রমণ করেন। খবর পেয়ে পাশের দলীয় কার্যালয়ের যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শফিকুলকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও আক্রমণ করা হয়। এতে বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকর্মীসহ কমপক্ষে ছয়জন আহত হন।

পরে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা বাবুর দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল মাস্টার ও তার ভাই মঞ্জুরুলসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

হামলার ঘটনাটি আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাইদের পরিকল্পিত বলে দাবি করে ছাপড়হাটি ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক এফ আই জাহাঙ্গীর মন্ডল বলেন, হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য শফিকুল ইসলাম, উপজেলা যু্বদলের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, ছাড়রহাটি ইউনিয়ন বিএনপি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলম কিবরিয়া মির্জা, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আলম মিয়া ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব। তাদের মধ্যে গোলম কিবরিয়া মির্জাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আহত গোলম কিবরিয়া মির্জা বলেন, হামলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও এক জামায়াত নেতা ছিল। দীর্ঘ এক বছর থেকে তাদের আক্রোশ আমার প্রতি। বিগত সময়েও বিএনপি করি দেখি তারা সব সময় নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, একটি মোটরসাইকেল বেঞ্চে ধাক্কা দেওয়ার পর এই হামলা হয়েছে। যদিও তাদের দুজনেরই দলীয় সম্পৃক্ততা রয়েছে তবে ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার শিকার ব্যক্তিরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর রবিবার (১৩ এপ্রিল) ১২ জন এবং অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

Scroll to Top