ভারতের মধ্যপ্রদেশে প্রেমিককে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার জেরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করেছিল এক তরুণী। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজে বের করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনলেও, মেয়েটি আদালতের সামনে জানায় সে আইনগতভাবে বিবাহিত এবং স্বামীর সঙ্গেই থাকতে চায়।
কিন্তু মেয়ের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তার বাবা ঋষিরাজ ওরফে সঞ্জু জসওয়াল। মেয়ের এই ঘটনায় প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের বেডরুমে পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর প্রকাশ করে।
মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানে মেয়ের উদ্দেশে লেখা ছিল, “হর্ষিতা, তুমি ভুল করেছো। আমি চলে যাচ্ছি। আমি চাইলে তোমাদের দুজনকে হত্যা করতে পারতাম। কিন্তু আমি কীভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করব?”
তিনি আরও লেখেন, “তুমি যা করেছো, ঠিক করোনি। আর যে আইনজীবী অল্প কিছু টাকার জন্য পুরো পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে, তার কি কোনো মেয়ে নেই? সে কি একজন বাবার কষ্ট বুঝতে পারে না? একটি পরিবার পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সমাজে এখন আর কিছু বাকি নেই।”
আইনি প্রক্রিয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। সুইসাইড নোটে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আর্য সমাজের অধীনে যদি একটি বিয়ে বৈধ না হয়, তাহলে আদালত কীভাবে একজন মেয়েকে তার সঙ্গীর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে? তারা আমাদের পুরো পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে। কেউ আমার কষ্ট বোঝেনি।”
গোয়ালিয়রের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিরঞ্জন শর্মা বলেন, “এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তরুণী অন্য সম্প্রদায়ের এক যুবককে বিয়ে করেছিল, যেটি তার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। সুইসাইড নোটে বাবার মানসিক অবস্থা এবং হতাশার বিষয়গুলো স্পষ্ট।”
অন্য একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণ লালচন্দনি জানান, ১৫ দিন আগে তরুণী প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে ইন্দোর থেকে তাকে খুঁজে আনা হয়। এরপর আদালতে সে স্বামীর সঙ্গে থাকার আবেদন জানায়। এই ঘটনার পর থেকেই তার বাবা বিষন্নতায় ভুগছিলেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মেয়ের সিদ্ধান্ত এবং বাবার আত্মহননের মতো চূড়ান্ত পরিণতি অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে পরিবার, সমাজ এবং আইনি ব্যবস্থার ভূমিকা নিয়ে।